বীরশ্রেষ্ঠ ৭ জন বীরশ্রেষ্ঠের নামের তালিকা
আপনারা যারা দেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে আমাদের আজকের পোস্টটি ভিজিট করছেন তাদের সবাইকে জানাই আমাদের ওয়েবসাইটের পক্ষ থেকে শুভেচ্ছা। আজ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি টপিক নিয়ে আপনার সাথে কথা বলবো। বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার ৫০ বছর পার হয়ে গেছে। ৫০ বছর পরে এসে আমরা এখন একটি উন্নয়নশীল রাষ্ট্রে পরিণত হয়েছে। এই ৫০ বছরে দেশের অনেক কিছু পরিবর্তন হয়েছে। পদ্মা সেতু,, মেট্রোরাল, বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট এর মত বড় বড় প্রজেক্ট সম্পন্ন হয়েছে। বিশ্বের বুকে বাংলাদেশ মাথা উঁচু করে দাঁড়াতে পারছে। বাংলাদেশ থেকে হাজার হাজার যুবক যুবতীরা দেশের বাইরে বিভিন্ন নাম করা বিশ্ববিদ্যালয় ও কলেজে পড়াশোনা করছে।
বাংলাদেশের বিজ্ঞানীরা গবেষণা ক্ষেত্রে বড় বড় অবদান রাখছে। ক্রীড়া ক্ষেত্রেও বাংলাদেশের সাফল্য ঈর্ষণীয়। সব মিলিয়ে বাংলাদেশ এখন যেকোনো দেশের জন্য হিংসার পাত্র হতেই পারে। এই বাংলাদেশের অনেক খারাপ অবস্থা ছিল 1971 সালে। মুক্তিযুদ্ধের সময় বাংলাদেশের প্রতিটি অঞ্চল ভীষণ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল। বাংলাদেশের জাতির জনক শেখ মুজিবুর রহমান ভাঙ্গাচুড়া একটি দেশ নিয়ে আবার যাত্রা শুরু করেছিলেন। তিনি স্বপ্ন দেখেছিলেন বাংলাদেশ এক সময় পৃথিবীর অন্য অনেক দেশকে ছাড়িয়ে যাবে। তার দেখা স্বপ্ন এখন বাস্তবে রূপ নিচ্ছে। তবে পাকিস্তানের অধীনে থাকাকালীন প্রতিটি বাঙালি যে স্বপ্ন দেখেছিলেন তা কাদের জন্য সত্যি হয়েছে তা কি আমার মনে রাখি? আমাদের কি মনে আছে কোন মানুষগুলো নিজের প্রাণ উৎসর্গ করেছিল শুধুমাত্র পৃথিবীর বুকে বাংলাদেশ নামক একটি রাষ্ট্র দেখার জন্য? আমরা অনেকেই হয়তো মাঝে মাঝে তাদের কথা ভাবি কিন্তু বেশিরভাগই তাদের ভুলে যাই বিভিন্ন কাজের মাঝে।
আজ এই যে আমরা বাংলা ভাষায় কথা বলছি, স্বাধীনভাবে চলাফেরা করতে পারছি, বিভিন্ন সরকারি পদে চাকরি করতে পারছি, সকল প্রকার সরকারি সুযোগ-সুবিধা লাভ করতে পারছি । পাকিস্তানের অধীনে থাকলে আমরা কি সুযোগ সুবিধা লাভ করতে পারতাম? এ প্রশ্নের উত্তর হয়তো আমাদের প্রজন্মের অনেকেই দিতে পারবে না। কি কারনে দিতে পারবে না তাও নিশ্চয়ই আমাদের কাছে স্পষ্ট। আমরা তো দেখিনি পাকিস্তানের অধীনে থাকাকালীন বাংলাদেশ কেমন ছিল। আমাদের আগের প্রজন্ম কিংবা তার আগের প্রজন্মের মানুষগুলো নিজের চোখে দেখেছে পূর্ব পাকিস্তানীদের নির্যাতনের চিত্রগুলো। সেসব দৃশ্যগুলো এখন উঠে আসে চলচ্চিত্র ও উপন্যাসের মধ্যে। আপনারা যারা মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক চলচ্চিত্র দেখেছেন তারা নিশ্চয়ই এই বিষয়গুলো খুব ভালোভাবে উপলব্ধি করতে পারছেন।
আবার যুদ্ধের সময়ের উপন্যাস গুলো যারা পড়েছেন কিংবা সে সময় প্রবন্ধগুলো যারা পড়ছেন তারাও বিষয়টা খুব সহজে ধরে ফেলতে পারবেন। বাংলাদেশের জনপ্রিয় উপন্যাসিক জহির রায়হান মুক্তিযুদ্ধের সময়কার চিত্রগুলো তুলে ধরেছেন তার সিনেমার মধ্যে আর লেখার মধ্যে। বাংলাদেশের বিখ্যাত কথা সাহিত্যিক হুমায়ূন আহমেদের নাম নিশ্চয়ই আপনারা শুনে থাকবেন। হুমায়ূন আহমেদ মুক্তিযুদ্ধের সময়-ই লিখেছিলেন তার বিখ্যাত উপন্যাস নন্দিত নরকে। তার আরো একটি উপন্যাস আগুনের পরশমণি পাঠকদের হৃদয় জয় করে নিয়েছে। আগুনের পরশমণি ছবিটিও আমাদের অনেকেরই দেখা। পাকিস্তানি মিলিটারিরা কিভাবে সহজ-সরল বাঙ্গালীদের উপর ঝাঁপিয়ে পড়েছিল তার চিত্রগুলো ফুটে ওঠে এই ছবির মাধ্যমে।
আমরা যেমন দেখতে পেয়েছি পাকিস্তানি মিলিটারিরা কিভাবে বাঙ্গালীদের উপর নির্যাতন করেছিল ঠিক তেমনি ভাবে আমরা দেখতে পেরেছি বীর বাঙালিরা কিভাবে পাকিস্তানি মিলিটারিদের বিরুদ্ধে যুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়েছিল। সশস্ত্র বাহিনীর বিপক্ষে যুদ্ধ করা মোটেও সহজ কোনো কাজ ছিল না। তাছাড়া মিলিটারিরা ছিল প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত। তাদের বিরুদ্ধে লড়েছে আমাদের দেশের বিভিন্ন পেশার মানুষ। ছাত্র-শিক্ষক, কৃষক, জেলে, পুলিশ, ইপিআর ছাড়াও বিভিন্ন সরকারি কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা এক যোগে ঝাঁপিয়ে পড়ে যুদ্ধে।
১৯৭১ সালে ৭ই মার্চ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সেই ঐতিহাসিক ভাষণের পর বাঙালিরা আর ঘরে বসে থাকতে চাইনি। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বলেছিলেন যার যা আছে তাই নিয়েই যুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়তে। দেশের মানুষ ও তার ডাকে সাড়া দিয়ে নিজের শেষ সম্বল নিয়েই দেশকে মুক্ত করার কাজে লেগে পরে। যার যেমন সামর্থ্য ছিল সে অনুযায়ী চেষ্টা করে গেছে সবাই। তবে এর মাঝেও এক শ্রেণীর মানুষ মুক্তিযুদ্ধের বিরুদ্ধে কাজ করেছে। তারা পাকিস্তানি মিলিটারিদের সহায়তা করেছে যুদ্ধের সময়। সে সময় প্রতিটি বাঙালি নিজের প্রাণের ভয় না করে কাজ করেছে দেশকে মুক্ত করার জন্য।
বাঙালিরা ধৈর্য হারিয়ে ফেলেছিল। এত নির্যাতন কখনো সহ্য করা যায় না। এরপরও বাঙালিরা মুখ বুজে সব কিছু সহ্য করে আসছিল। ধৈর্যের বাঁধ ভেঙে যায় ২৫ শে মার্চ 1971 সালের পরপরই। ২৫ শে মার্চ রাতে নিরীহ বাঙ্গালীদের ওপর পাকিস্তানে মিলিটারিরা যেভাবে ঝাঁপিয়ে পড়ে চোখে দেখে এরপর আর ঘরে বসে থাকা যায় না। বাঙালিরা ভেবেছিল চুপ করে বসে থাকলে কখনোই মুক্তি মিলবে না। মুক্তির জন্য লড়াই করতে হবে। লড়াই করার এই মানসিকতাই শেষ পর্যন্ত বাঙ্গালীদের স্বাধীনতা এনে দিয়েছিল। তবে এই স্বাধীনতার পেছনে যে মানুষগুলো সবচেয়ে বড় অবদান রেখেছে তাদেরকে আজ আমরা ভুলতে বসেছি। আজ হয়তো আমরা নিজেদের মতো সময় কাটাচ্ছি।
আমরা হয়তো একবারের জন্য ভাবছি না শুধুমাত্র আমাদের কথা ভেবে যে মানুষগুলো নিজেদের জীবন উৎসর্গ করে দিয়েছে। বর্তমান প্রজন্মের অনেক ছেলেমেয়েরা জানে না মুক্তিযুদ্ধের সময় মুক্তিযোদ্ধারা কত কষ্টের দিন পার করেছে। এখনো মুক্তিযোদ্ধাদের কাছে বসলে যুদ্ধের সময়ের বিভিন্ন কাহিনী শোনা যায়। মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস জানা প্রতিটি বাংলাদেশের দায়িত্বের মধ্যেই পড়ে। আমাদের দেশকে আমরা কিভাবে রক্ষা করব সে শিক্ষা মুক্তিযোদ্ধাদের থেকে আমরা নিতে পারি।
মুক্তিযুদ্ধের সময় নিজেদের প্রাণ উৎসর্গ করেছিল এমন সাতজন বীরকে বীরশ্রেষ্ঠ উপাধি দেওয়া হয়। সেই সাতজন বীরের নাম অনেকেই জানেন আবার অনেকেই হয়তো ঠিকমতো মনে করতে পারেন না। তবে আজ সাত জন বীরশ্রেষ্ঠের নাম জানার জন্য যারা আমাদের এই পোস্ট ভিজিট করতে এসেছেন তাদেরকে সালাম জানাই। আপনারা যে এখনো সাতজন বীরশ্রেষ্ঠের কথা স্মরণ করেন এটা দেখার পর আপনাদের ধন্যবাদ দেওয়া উচিত। কয়জনই বা আপনাদের মত মুক্তিযোদ্ধাদের কথা স্মরণ করে। অনেকেই হয়তো শুধুমাত্র চাকরির পরীক্ষার জন্য এসব তথ্য সংগ্রহ করতে আসে। যে তথ্যগুলো প্রতিটি বাঙালির মনের মধ্যে গেঁথে থাকা উচিত সে তথ্যগুলোই আমরা সংগ্রহ করতে আসে শুধুমাত্র নিজেদের স্বার্থের কথা ভেবে।
বাংলাদেশের ৭ জন বীরশ্রেষ্ঠের বীরত্বের ঘটনা শোনার পর কেউই চোখের পানি ধরে রাখতে পারবেনা। অত্যন্ত কম বয়সে এই সাতজন নিজেদের জীবন দেয় দেশকে মুক্ত করার জন্য। এদের কেউ কেউ আবার ঘরে স্ত্রী সন্তান রেখে যুদ্ধে অংশ নেয়। আপনারা যারা শুধুমাত্র ৭ জন বীরশ্রেষ্ঠের নামের তালিকা সমূহের জন্য আমাদের পোস্টে ভিজিট করছেন তাদেরকে অনুরোধ করব আপনারা এই সাতজনের জীবনী পড়ে দেখুন। এই সাতজন বীরশ্রেষ্ঠের জীবনে পড়ে আপনি যেমন তাদের ব্যক্তিগত জীবন সম্পর্কে জানতে পারবেন তেমনি তারা আপনার জীবনে আদর্শ হয়ে থাকবে। তাদের জীবন থেকে নেওয়া শিক্ষা আপনি চাইলে নিজের জীবনেও কাজে লাগাতে পারবেন।
সাতজন বীরশ্রেষ্ঠের নামের তালিকা আমরা এই পোষ্টের সাথে যুক্ত করে দেব। আপনারা পোষ্টের মধ্যেই তালিকাটি পেয়ে যাবেন। তবে এই তালিকা থেকে আপনারা তাদের জীবন সম্বন্ধে বিস্তারিত তথ্য হয়তো পাবেন না। তাদের জীবনের বিস্তারিত অনেক ঘটনা জানতে হলে তাদের জীবনী পড়তে হবে। এমন অনেক বই রয়েছে যেখানে মুক্তিযুদ্ধে শহীদ হওয়া সাতজন বীরশ্রেষ্ঠের জীবনের অনেক ঘটনা তুলে ধরা হয়েছে। আমাদের আজকের আলোচনা এই পর্যন্তই। মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে আরো অনেক তথ্য জানতে চোখ রাখুন আমাদের ওয়েবসাইটে। আপনি যদি কোন তথ্য জানতে চান অথবা জানাতে চান তবে কমেন্ট বক্সে এসে লিখে জানাতে পারেন। দেখা হবে গুরুত্বপূর্ণ আরো একটি পোস্টে। সে পর্যন্ত সবাই সুস্থ থাকুন, নিজের যত্ন নিন, নিজের পরিবারকে আগলে রাখুন।