বাংলা অশ্লীল সিনেমার নামের তালিকা

এক সময় বাংলাদেশ এক হাজারেরও বেশি সিনেমা হল ছিল। আস্তে আস্তে হলে সংখ্যা কমতে কমতে বর্তমানে ২শর ও নিচে নেমে এসেছে। তবে কি সিনেমার প্রতি দর্শকরা আগ্রহ হারিয়ে ফেলছে? কেন দর্শকরা হলমুখী হচ্ছেনা? এই প্রশ্নের উত্তর খুজবো আমাদের আজকের আর্টিকেলের মাধ্যমে। আপনারা হয়তো অনেকেই জানেন না বাংলাদেশে এত ভালো ভালো সিনেমা তৈরি হবার পরেও কেন দর্শকরা হলে যেতে চায়না। আমাদের পার্শ্ববর্তী দেশ ভারতে এখন পর্যন্ত অনেক সিনেমা হল চালু রয়েছে। সেখানে নিয়মিত সব ধরনের সিনেমার প্রদর্শনী চলছে। তবে আমাদের দেশে কেন সিনেমার প্রতি এত অনীহা? আমাদের দেশের সিনেমাগুলো কি সুস্থ বিনোদন দিতে অক্ষম?

নাকি সিনেমার মধ্যে এখন দর্শকরা বিনোদন খুঁজে পাচ্ছে না? আপনারা যারা নিয়মিত সিনেমার খোঁজ খবর রাখেন তারা অনেকেই হয়তো জানেন সম্প্রতি ভারতের সুপারস্টার শাহরুখ খানের নতুন সিনেমা পাঠান বাংলাদেশের মুক্তি দেবার কথাবার্তা চলছে। এর প্রতিবাদ করেছে বাংলাদেশের অনেক অভিনেতা অভিনেত্রী। হল মালিকরা অনেকেই সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তারা নিজেদের হলে শাহরুখ খানের সিনেমা চালাবেন। বাংলাদেশের সিনেমা রেখে ভারতের হিন্দি সিনেমা চালানো কতটা যুক্তিযুক্ত হবে এ নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন অনেকেই।

বাংলাদেশের সিনেমা রেখে অন্য দেশের সিনেমা হলে চালানোর সিদ্ধান্ত কেন নিচ্ছেন হলমালিকরা তা হয়তো আপনাদের বুঝিয়ে বলতে হবে না। হলমালিকা নিশ্চয়ই চাইছেন শাহরুখ খানের সিনেমার মাধ্যমে নিজেদের ব্যবসা দাঁড় করাতে। এ থেকে বোঝা যাচ্ছে বাংলা সিনেমা হলে খুব একটা চলে না। কি এমন আছে হিন্দি সিনেমাতে যে দর্শকরা বাংলা সিনেমা ছেড়ে হিন্দি সিনেমা দেখার প্রতি বেশি আগ্রহী হচ্ছে। এছাড়াও আমরা আজকের আর্টিকেলের মাধ্যমে আপনাদের সাথে কিছু বাংলা সিনেমার তালিকা শেয়ার করব।

বাংলা সিনেমা ও হিন্দি সিনেমার মধ্যে সবচেয়ে বড় তফাৎটা তৈরি হয় বাজেটের জন্য। হিন্দি সিনেমার বাজেট যেখানে কয়েকশো কোটির উপরে থাকে সেখানে বাংলা সিনেমার বাজে টেনেটুনে এক কোটি ও হয় না। এ কারণে নির্মাতারা খুব ভালো কনটেন্ট তৈরি করতে পারেন না। স্বাভাবিকভাবে বোঝা যাচ্ছে এক কোটি টাকা দিয়ে তৈরি করা কনটেন্ট কখনোই ১০০ কোটি টাকা দিয়ে তৈরি কন্টেন্টের মতো হবে না। হিন্দি সিনেমার মতো সিনেমা বানাতে গেলে বাংলাদেশের নির্মাতাদেরও কয়েকশো কোটি টাকা খরচ করতে হবে। এর পাশাপাশি অভিনেতাদের করতে হবে কঠোর পরিশ্রম।

অনেকে হয়তো বাংলাদেশের নির্মাতাদের যোগ্যতা নিয়ে প্রশ্ন তুলতে পারেন তবে একথা মনে রাখতে হবে এত অল্প পরিমাণ বাজেট নিয়ে যে নির্মাতারা এত ভাল ভাল কনটেন্ট তৈরি করতে পারেন তারা বেশি বাজেট পেলে আরো কত ভালো কনটেন্ট তৈরি করতে পারবেন। বাংলাদেশের অনেক অভিনেতা অভিনেত্রী রয়েছে যারা বর্তমানে ভারতে গিয়ে অনেক কাজ করছে। কলকাতা ছবিগুলোতে বাংলাদেশী অভিনেতা অভিনেত্রীরা নিয়মিত কাজ করে আসছে অনেকদিন আগে থেকেই। সুতরাং বাংলাদেশী অভিনেতা অভিনেত্রীদের যোগ্যতা নিয়ে প্রশ্ন তোলার কোন মানেই হয় না। তারা যোগ্য বলেই ভারতের ছবিগুলোতে কাজ করার সুযোগ পাচ্ছে।।

আপনারা যারা আয়নাবাজি অথবা ঢাকা অ্যাটাকের মত ছবি দেখেছেন তারা কখনোই বাংলাদেশের ছবির মান নিয়ে প্রশ্ন তুলতে পারবেন না। এত কম সুযোগ-সুবিধা পেয়েও যে নির্মাতারা এত জনপ্রিয় কনটেন্ট তৈরি করতে পেরেছেন তারা আরও বেশি সুযোগ সুবিধা পেলে নিশ্চয়ই এমন কনটেন্ট তৈরি করতে পারত যা হয়তো দক্ষিণ এশিয়ার মধ্যে বেস্ট কন্টেন্ট হতো। আপনারা অনেকেই কমেন্ট বক্সে এসে জানতে চেয়েছেন বাংলাদেশে আসলে অশ্লীল সিনেমা তৈরি হয় কিনা। বাংলাদেশের যে সিনেমাগুলো তৈরি হয় বর্তমানে তার সবগুলোই মানসম্মত। তবে একটা সময় ছিল যখন বাংলাদেশে প্রচুর পরিমাণ অশ্লীল সিনেমা তৈরি হতো। আপনারা যারা সেই সময় নিয়মিত সিনেমা দেখতেন তারা সকলেই এই তথ্য জানেন।

এই অশ্লীল সিনেমা গুলো কেন তৈরি হতো এ প্রশ্নের উত্তর আপনাদের জানা উচিত। অনেকে হয়তো ভাবতে পারেন নির্মাতারা ভালো কনটেন্ট তৈরি করতে পারতেন না বলেই অশ্লীল সিনেমা বানানোর মত কাজ করতেন। ৯০ এর দশক থেকে শুরু করে ২০১০ সাল পর্যন্ত বাংলাদেশে অনেক ভালো ভালো ছবি তৈরি হয়েছে। ১৯৯৬ সালের দিকে সালমান শাহ নিয়মিত যখন অভিনয় করতেন তখন বাংলাদেশের প্রতিটি হল ছিল দর্শকে পরিপূর্ণ। তখনকার সময়ের সিনেমাগুলো ছিল পরিবার নিয়ে দেখার মত। তবে কিছু কিছু নির্মাতারা অশ্লীল সিনেমা তৈরি করার সিদ্ধান্ত নেন। হয়তো তাদের ধারণা ছিল অশ্লীল সিনেমার মাধ্যমে আরও বেশি দর্শক হলে টেনে আনা যাবে। তবে এই অশ্লীল সিনেমা গুলো বাংলাদেশের সিনেমার বাজার ধ্বংস করেছে বলে অনেকে মনে করেন।

আপনি যদি একটি সিনেমা নিজের পরিবারকে সাথে নিয়ে না দেখতে পারেন তবে কখনোই হয়তো হলে গিয়ে সিনেমা দেখার সিদ্ধান্ত নিতে পারবেন না। আমরা সিনেমা হলে যাই সাধারণত পরিবারের সকলে মিলে সুন্দর একটি সময় কাটানোর উদ্দেশ্যে। সুন্দর সময় কাটানোর উদ্দেশ্যে সিনেমা হলে গেলেও আমাদের সময় গুলো আরো বেশি বোরিং হয়ে পড়ে যদি সিনেমাটি দেখার মত না হয়। আবার সিনেমার মধ্যে যদি এমন কোন দৃশ্য থাকে যা পরিবার নিয়ে দেখার উপযোগী নয় তবে আরো বেশি ঝামেলায় পড়তে হয়। সুতরাং বলা যায় পরিবার নিয়ে দেখা যাবে না এমন কনটেন্ট তৈরি করলে দর্শক হলমুখী হওয়ার চেয়ে আরো বেশি আগ্রহ হারাবে।

তবে কোন ধরনের কনটেন্ট তৈরি করলে দর্শকরা বেশি বেশি হলে আসতে পারে? দর্শকদের হলে নিয়ে আসার জন্য এমন কনটেন্ট তৈরি করতে হবে যা সব বয়সের মানুষ একসাথে বসে দেখতে পারবে। আপনি আপনার সন্তানকে নিয়ে সিনেমা হলে যাবেন শুধুমাত্র এইটা ভেবে যেন আপনার সন্তান সিনেমাটি দেখে নতুন কিছু শিখতে পারে। অপরদিকে সিনেমায় যদি এমন কোন দৃশ্য থাকে যা আপনি কখনোই নিজের সন্তানকে নিয়ে বসে দেখতে পারবেন না তখন পরিবার নিয়ে সিনেমাটি দেখার আপনার আর কোন আগ্রহ থাকবে না। দর্শকরা সিনেমা হলে না আসার পেছনে আরো বেশ কয়েকটি কারণ রয়েছে যা এখন তুলে ধরার চেষ্টা করব।

বর্তমান সময়ে আমাদের সকলের হাতেই স্মার্টফোন রয়েছে। হাতে একটি স্মার্ট ফোন ও ইন্টারনেট কানেকশন থাকলে পুরো পৃথিবীটাই আমাদের হাতের মুঠোয় মনে হয়। এমন অবস্থায় আমরা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বিভিন্ন ভিডিও দেখে সময় কাটাতে পারি। সারাদিন কাজকর্ম সেরে বিনোদনের জন্য মানুষ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমকেই বেছে নেয়। সিনেমা হলে গিয়ে মুভি দেখার মত সুযোগ তেমনটা আর তৈরি হয় না। বাড়িতে বসে যদি আমরা বিনোদন পেতে পারি তবে সিনেমা হলে যাবার প্রয়োজন নিশ্চয়ই হবে না। ঘরে বসেই আমরা ওটি টি প্লাটফর্মে বিভিন্ন ওয়েব সিরিজ অথবা ওয়েবফিল্ম দেখে সময় কাটাতে পারি। মুভি দেখার জন্য সিনেমা হলে যেতে হবে এমন কোন কথা নেই।

আবার কনটেন্ট যেমনই হোক না কেন, প্রতিটি প্লাটফর্মে আমরা নিজে নিজে বসে দেখতে পারি। এক্ষেত্রে আমাদের অভিযোগ করার কোন ধরনের সুযোগ থাকে না। সিনেমা হলে গিয়ে দেখলে তো একা একা দেখা যায় না। আপনারা যদি ১৮ প্লাস মুভি দেখতে চান তবে নিজে নিজে ঘরে বসে দেখতে পারেন। আপনার হাতের মোবাইল ফোনটি দিয়ে যেকোনো ওয়েবসাইট থেকে মুভি ডাউনলোড করে দেখতে পারেন। আমরা চেষ্টা করব আপনাদের জন্য বেশ কিছু মুভি সাজেস্ট করতে যেগুলো দেখলে আপনারা নতুন অনেক কিছু শিখতে পারবেন। প্রিয়জনকে নিয়ে মুভি দেখে সুন্দর কিছু মুহূর্ত উপভোগ করতে পারবেন এমন মুভি গুলোও আমরা সাজেস্ট করার চেষ্টা করব। আশা করি আমাদের পরের পোস্ট গুলো পাওয়া পর্যন্ত আপনারা আমাদের সাথে থাকবেন। এ বিষয়ে আপনাদের আরো কোন প্রশ্ন থাকলে কমেন্টের মাধ্যমে জানিয়ে দিন।