সিগারেটের নামের তালিকা

সিগারেটের নামের তালিকা

বাংলাদেশে কোন কোন ব্র্যান্ডের সিগারেট সবচেয়ে বেশি চলে তা নিয়ে আমরা আজ কথা বলব শেষ পর্যন্ত। আপনারা যারা নিয়মিত ধূমপান করেন তারা নিশ্চয়ই সব ব্র্যান্ডের সিগারেট খেয়েছেন। কোন ব্র্যান্ডের সিগারেট সবচেয়ে বেশি ভালো এবং কোন ব্যান্ডের সিগারেট মোটামুটি মানের তা না খেলে হয়তো বোঝা খুব কঠিন। আমরা আজকে বাংলাদেশের এমন কিছু ব্র্যান্ডের সিগারেট নিয়ে কথা বলব যেগুলো অনেক জনপ্রিয় এবং দীর্ঘদিন ধরে বাজারে রয়েছে। এছাড়াও আমরা আপনাদের সাথে আলোচনা করব ধূমপানের সুফল ও কুফল নিয়ে।

আশা করি শেষ পর্যন্ত থেকে আমাদের আলোচনাটি মনোযোগ দিয়ে পড়বেন এবং বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ ও কার্যকরী তথ্য সংগ্রহ করে নিবেন। যারা নিয়মিত ধূমপান করেন তাদের জন্য এই আর্টিকেলটি অনেক বেশি গুরুত্বপূর্ণ। আবার যারা ধূমপান করেন না কিন্তু খুব শীঘ্রই ধূমপান শুরু করার কথা ভাবছেন তাদের জন্যও বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ পরামর্শ রয়েছে আমাদের আজকের পোষ্টের মধ্যে। আপনার ধূমপাই বন্ধুকে কিভাবে ধূমপান করা থেকে বিরত রাখতে পারবেন তা জানতে সাথে থাকুন।

আমরা সিগারেটের প্যাকেটে লেখা দেখি ধূমপান স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর। ধূমপানের কারণে স্টক হয় অথবা ধূমপান হৃদরোগের কারণ। সিগারেটের প্যাকেটে এ লেখাগুলো দেখার পরেও আমরা নিয়মিত সিগারেট খেয়ে থাকি। সিগারেট খাওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়াটা মোটেও ভালো কিছু নয় । এরপরেও কেন মানুষ সিগারেট খেতে চায়? এ প্রশ্নের উত্তর বের করা দরকার। চলুন এ প্রশ্নের উত্তর খুঁজে বের করি। সিগারেটের মধ্যে নিকোটিন থাকে একথা আমরা অনেকেই জানি। নিকোটিন কি করে? আমরা যখন প্রচন্ড হতাশার মধ্যে থাকি অথবা মানসিকভাবে দুশ্চিন্তা গ্রস্ত থাকি তখন নিকোটিন গ্রহণ করলে সাময়িকভাবে স্বস্তি লাভ করি।

এভাবে নিকোটিন গ্রহণ করতে করতে একটা সময় আমাদের শরীরের নিকোটিনের চাহিদা বেড়ে যায়। নিকোটিনের চাহিদা বেড়ে গেলে নিয়মিত সিগারেট খাওয়া ছাড়া অন্য কোন উপায় থাকে না। এ অবস্থায় সিগারেট না খেয়ে থাকা অনেক কষ্টকর। আমরা চাইলেও একজন ধূমপায়ীকে খুব সহজে ধূমপান থেকে বিরত রাখতে পারব না। তাই সিগারেটের ওপর ওই ধরনের লেখা দেখার পরেও ধূমপায়ীরা সিগারেট খাওয়া থেকে বিরত থাকে না। সিগারেটের প্যাকেটের উপর এই লেখাগুলো দেখতে দেখতে এক সময় তারা অভ্যস্ত হয়ে পড়ে। চলুন দেখে আসা যাক ধূমপায়ীদের পরবর্তীতে কোন ধরনের সমস্যা সম্মুখীন হতে হবে।

ধূমপান হৃদরোগের ঝুঁকি বাড়ায়। বর্তমান সময়ে আমরা যে রোগের কথা সবচেয়ে বেশি শুনে থাকি তা হচ্ছে হৃদরোগ। সব বয়সের মানুষ হৃদরোগে আক্রান্ত হতে পারে। যেসব মানুষ পরিশ্রম কম করে তাদের হৃদরোগে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা অনেক বেশি। ঠিক একই ভাবে যারা নিয়মিত ধূমপান করে তাদের জন্য হৃদরোগে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা অনেক বেশি। ধূমপান মানুষের শরীরে যে অঙ্গটির সবচেয়ে বেশি ক্ষতি করে তা হচ্ছে ফুসফুস। ফুসফুসের মাধ্যমে আমরা শ্বাস-প্রশ্বাস গ্রহণ করি।

আমরা যখন ধূমপান করি তখন সিগারেটের ধোঁয়া আমাদের ফুসফুসে প্রবেশ করে। সিগারেটের ধোঁয়া সরাসরি ফুসফুসে প্রবেশ করে আস্তে আস্তে ফুসফুসের কার্যক্ষমতা নষ্ট করে দেয়। এভাবে চলতে চলতে একটা সময় ফুসফুস কালো বর্ণ ধারণ করে। যে কোন জিনিস আগুনে পুড়তে পুড়তে একসময় কালো হয়ে যায় ঠিক তেমনভাবে সিগারেটের ধোঁয়ায় পড়তে পড়তে ফুসফুস ও একসময় কালো হয়ে যায়। এক সময় ধূমপায়ীদের ফুসফুসের সকল কার্যক্ষমতা নষ্ট হয়ে যায়। ফুসফুসের ক্যান্সার, ফুসফুসে সংক্রমণ ইত্যাদি রোগের নাম আপনার শুনে থাকবেন। এই রোগগুলো হবার প্রধান কারণ হলো ধূমপান।

ধূমপানের কুফল গুলো তো আমরা দেখলাম, ধূমপানের কি কোন সুফল রয়েছে? যারা নিয়মিত ধূমপান করেন তারা হয়তো বলবেন ধূমপান তাদের মানসিকভাবে স্বস্তি দেয়। ধূমপান সাময়িকভাবে মানসিক স্বস্তি দিলেও আস্তে আস্তে আমাদের শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা নষ্ট করে ফেলে। ধূমপানের কারণে একটি শরীর আস্তে আস্তে রোগবালাইয়ের কারখানা তৈরি হয়। এরপরও আমাদের দেশে দুই-তৃতীয়াংশ মানুষ নিয়মিত ধূমপান করে থাকে। তারা ধূমপানের কুফল সম্বন্ধে অবগত হলেও খুব বেশি কিছু মানতে চায় না। এমনকি পাবলিক প্লেসে ধূমপান করা এখন স্বাভাবিক একটি ব্যাপার হয়ে দাঁড়িয়েছে।

যারা প্রত্যক্ষভাবে ধূমপান করেন তাদের চেয়ে বেশি ক্ষতি হয় পরোক্ষভাবে ধূমপান করলে। পরোক্ষ ধূমপান বিষয়টিকে আপনারা বুঝতে পেরেছেন? মনে করেন একজন মানুষ ধূমপান করে না কিন্তু সে মেলামেশা করে এমন একজন মানুষের সাথে যে নিয়মিত ধূমপান করে, এখন ধুমপায়ী ব্যক্তিটি যদি অধুমপায়ী ব্যক্তির সামনে ধূমপান করে তবে অধুমপায়ী ব্যক্তিটির পরোক্ষভাবে ধূমপান করা হবে। নিশ্চয়ই সিগারেটের ধোঁয়া যেকোনো ব্যক্তির শরীরে খুব সহজে প্রবেশ করতে পারে। সিগারেটের ধোয়া যদি কোন ব্যক্তি শরীরে প্রবেশ করে তবে ক্ষতি হওয়া স্বাভাবিক। যারা নিয়মিত ধূমপান করেন তারা কখনোই পাবলিক প্লেসে ধূমপান করবেন না। আপনার জন্য সাধারণ মানুষের কষ্ট হতে পারে। এছাড়াও ছোট বাচ্চাদের সামনে অথবা মেয়েদের সামনে ধূমপান করা উচিত নয়।

আপনারা হয়তো ভাবছেন যে আলোচনা করার কথা বাংলাদেশের জনপ্রিয় সিগারেটের ব্র্যান্ডগুলো নিয়ে কিন্তু ধূমপানের কুফল নিয়ে এত কথা কেন হচ্ছে। দেখুন আমাদের প্রথম কাজ হল আপনাকে ধূমপান থেকে দূরে রাখা, আপনাকে ধূমপানের পরামর্শ দেওয়া আমাদের কাজ নয়। এর পরও যদি আপনি স্ব ইচ্ছায় ধূমপান করতে চান তবে এক্ষেত্রে আমরা বাধা দিতে পারি না। আমরা আপনাকে পরামর্শ দিতে পারি যেন আপনি ধূমপান থেকে দূরে থাকতে পারেন। এরপর যদি আপনি নিয়মিত ধূমপান করার সিদ্ধান্ত নিয়ে থাকেন তবে বাংলাদেশে কোন কোন ব্র্যান্ডের সিগারেট বেশি জনপ্রিয় তা জেনে নিতে পারেন। আপনি ধূমপান না করলেও এ তথ্যটি আপনার জানা প্রয়োজন হতে পারে।

চলুন দেখে আসা যাক বাংলাদেশে কোন কোন ব্যান্ডের সিগারেট খুব বেশি চলে। বাংলাদেশের জনপ্রিয় সিগারেটের ব্র্যান্ড হলো গোল্ডলিফ। এই ব্র্যান্ডটি বাংলাদেশ ছাড়াও অন্যান্য অনেক দেশেই জনপ্রিয়। স্বাদ গন্ধ ওঝাঝে গোল্ডলিফ সিগারেট অন্যান্য সিগারেটের থেকে অনেক এগিয়ে রয়েছে। তবে বাংলাদেশে গোল্ড লিফ সিগারেটের দাম একটু বেশি হওয়ায় সাধারণ মানুষ খুব একটা কেনার সুযোগ পায় না। সাধারণ মানুষের জন্য জনপ্রিয় ব্যান্ড হলো ডার্বি ও শেখ। ডারবী ও শেখ সিগারেটের মূল্য নাগালের মধ্যে থাকায় খুব সহজেই কেনা সম্ভব হয়।

যারা নিয়মিত ধূমপান করেন তারা খরচ কমাতে ডার্বি সিগারেট খাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়ে থাকেন। ডারবি ছাড়াও আরো একটি জনপ্রিয় ব্যান্ড হলো রয়েল। এতক্ষণ আমরা যে সিগারেটগুলি নিয়ে আলোচনা করেছি এগুলো সাধ্যের মধ্যে জনপ্রিয়।। এগুলো ছাড়াও অনেক দামি কিছু সিগারেট আছে যেগুলো স্ট্যান্ডার্ড মানের। ব্ল্যাক, মোর, বন্ড এই সিগারেটগুলি অনেক জনপ্রিয় কিন্তু দামি।

আপনি যদি নিয়মিত ধূমপান করে থাকেন তবে আপনার জন্য আরও একটি ভালো ব্র্যান্ড হতে পারে বেনসন। বেনসন সিগারেট সাধারণত উচ্চবিত্ত পরিবারের মানুষ খেয়ে থাকে। যারা ধূমপানের পিছনে খুব বেশি টাকা খরচ করতে চায় না তাদের জন্য বেনসন সিগারেট নয়। একদিনে যদি আপনি বেনসনের এক প্যাকেট সিগারেট খেতে চান তবে প্রায় ২০০ টাকার কাছাকাছি খরচ করতে হবে। ধূমপানের পেছনে যদি প্রতিদিন ২০০ টাকা খরচ করার মতো সামর্থ্য না থাকে তবে বেনসন সিগারেট না খাওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া ভালো।

এক্ষেত্রে আপনি ডার্বি অথবা সেম টাইপের অন্য কোন ব্র্যান্ডে যেতে পারেন। আবার আপনি যদি প্রতিদিন দুই থেকে তিনটি সিগারেট খেয়ে থাকেন তবে বেনসন ব্র্যান্ড এ আপনার জন্য হতে পারে। যদি ধূমপান থেকে দূরে সরে আসতে চান তবে প্রতিদিন একটু একটু করে কমানো সম্ভব। আশা করি আমাদের আজকের পোষ্টের মাধ্যমে বাজারের প্রতিটি সিগারেটের সাথে পরিচিত হতে পেরেছেন। ধূমপান থেকে দূরে থাকুন, সুস্থ থাকুন।

Similar Posts

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *