সরকারি ব্যাংকের নামের তালিকা
বাংলাদেশের সরকারি ব্যাংক কোনগুলো এ প্রশ্ন করলে অনেকে হয়তো উত্তর দিতে পারবেন না। হাতেগোনা কয়েকটি ব্যাংক হয়তো আমাদের জানা রয়েছে যেগুলো সরকারি কিন্তু বেশিরভাগ সরকারি ব্যাংক-ই আমরা চিনি না। সরকারি ব্যাংক কেন চেনা লাগবে এবং কিভাবে চিনতে হবে এ বিষয়গুলো নিয়ে চলুন একটু কথা বলা যাক। আচ্ছা ব্যাংকের সাথে আমাদের সম্পর্ক কি? বর্তমান সময়ে এসে একজন মানুষকে ব্যাংক ছাড়া চলতে পারে? আমার কাছে তো মনে হয় কখনোই না। এখনকার প্রতিটি মানুষ তাদের জীবনে সমস্ত সঞ্চয় জমা রাখে ব্যাংকে। ব্যাংকে টাকা পয়সা জমা রাখার প্রধান কারণ হলো নিরাপত্তা।
অর্থাৎ ব্যাংক আপনার টাকা পয়সা তাদের কাছে রাখবে অন্যদিকে আপনি নিশ্চিন্তে থাকতে পারবেন। এছাড়াও আমরা ব্যাংক থেকে বিভিন্ন সময় ঋণ নেওয়ার সুযোগ সুবিধা পেয়ে থাকি। ব্যাংক থেকে পাওয়া ঋণ বিভিন্ন কাজে লাগানো যায়। নির্দিষ্ট সময় পর পর কিস্তি আকারে ব্যাংকের ঋণ পরিশোধ করার সুযোগ তো আছেই। এই সুযোগ-সুবিধা গুলো আপনি সরকারি ও বেসরকারি দুই ধরনের ব্যাংকেই পাবেন। এরপরও কোন ব্যাংকগুলো সরকারি এবং কোন ব্যাংকগুলো বেসরকারি তা জেনে রাখা দরকার। সরকারি ব্যাংকগুলো দেখভাল করে বাংলাদেশ সরকার। অপরদিকে বেসরকারি ব্যাংকগুলোর দেখাশোনা করে কোন ব্যক্তি অথবা অন্য কোন প্রতিষ্ঠান। চলুন আর জেনে নেওয়া যাক সরকারে ব্যাংকগুলোতে আপনি কোন ধরনের সেবা নিতে পারেন এবং বেসরকারি ব্যাংকগুলোতে আপনি কেমন সেবা পেতে পারেন।
আমরা কখনো টাকা জমানোর কথা ভাবলে সব কিছুর আগে মাথায় আসে সরকারি ব্যাংকের কথা। সরকারি ব্যাংকে টাকা জমা রাখলে সব সময় নিশ্চিন্তে থাকা যায়। একজন মানুষ অনেক কষ্ট করে টাকা আয় করে। আয় করা টাকা থেকে নিজের জীবনের চাহিদা পূরণ করার পর সঞ্চয় করে ভবিষ্যতের কথা ভেবে। কষ্ট করে জমানো টাকা গুলো কেউ চায় না এমন কোথাও রাখতে যেখানে হারিয়ে যাবার ভয় থাকে। এজন্য টাকা জমানার ক্ষেত্রে কেউই বেসরকারি কোন প্রতিষ্ঠানের উপর ভরসা করতে পারে না। বাংলাদেশে এমন অনেক ঘটনা ঘটেছে যেখানে বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের উপর ভরসা করে অনেক মানুষ টাকা জমা রেখেছে এবং সেই প্রতিষ্ঠানকে পরে আর খুঁজে পাওয়া যায়নি।
এ ঘটনাগুলো দেখার পর কোন মানুষই আর বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের উপর ভরসা করতে চায় না। যেহেতু সরকারি ব্যাংকগুলোতেই টাকা জমা রাখার সহজ উপায় রয়েছে, তাই বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের উপর ভরসা করার কোন প্রশ্নই আসে না। সরকারি ব্যাংকগুলোতে একজন ব্যক্তি যে কোন উপায়ে টাকা রাখতে পারে। আপনি চাইলে নির্দিষ্ট সময় পরপর নির্দিষ্ট অংকের টাকা জমা রাখতে পারেন অথবা এককালীন নির্দিষ্ট অংকের টাকা জমা রাখতে পারেন। এখানে টাকা জমা দেওয়া যেমন সহজ তেমনি সঠিক সময় টাকা তুলে নেওয়াও অনেক সহজ।
সরকারি ব্যাংকের কর্মীরা সার্বক্ষণিক সেবা দিয়ে থাকে। ছুটির দিনগুলো ব্যতীত অন্য দিনগুলোতে সকাল ৯ টা থেকে ৫ টা পর্যন্ত সরকারি ব্যাংকের কর্মীরা কাজ করে থাকে। এই সময়ের মধ্যে আপনি যেকোনো সময় গিয়ে সরকারি ব্যাংকের সেবা গ্রহণ করতে পারেন। কোন বিষয় বুঝতে না পারলে সরকারের ব্যাংকের কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা খুব সহজেই বুঝিয়ে থাকে। এ প্রতিষ্ঠানগুলোতে হয়রানির শিকার হবার কোন সুযোগ নেই। যেকোনো বিষয়ে প্রশ্ন থাকলে সরাসরি শাখা ব্যবস্থাপকের সাথে কথা বলে জেনে নেওয়া যায়। যদি শাখা ব্যবস্থাপকের ফোন নাম্বার নিজের কাছে সংগ্রহ করে রাখতে পারেন তবে বাড়ি থেকেই ফোন করে যে কোন প্রশ্ন জিজ্ঞেস করতে পারবেন। আবার কেউ যদি ভেবে থাকেন সরাসরি ব্যাংকে গিয়ে শাখা ব্যবস্থাপকের সাথে কথা বলবেন তবে সেটাও সম্ভব।
কেউ যদি আপনাকে বেসরকারি কোন প্রতিষ্ঠানে টাকা জমা দেওয়ার জন্য পরামর্শ দেয় তবে বিষয়টি ভেবে দেখা দরকার। এ বিষয়ে আপনি এমন কোন মানুষের পরামর্শ নিবেন যে ব্যাংকের সাথে অনেক দিন ধরে লেনদেন করে আসছে। বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে টাকা জমা দেওয়ার ক্ষেত্রে সঠিক কাগজপত্র যাচাই করা জরুরী। তবে এ ধরনের কাজ করা থেকে বিরত থাকা উচিত। যেহেতু এখন সরকারি ব্যাংকে লেনদেন করা অনেক সহজ এবং কম সময়ের মধ্যেই লেনদেন করা যায় তাই অন্য কোন প্রতিষ্ঠানের উপর ভরসা করে ক্ষতিগ্রস্ত হবার প্রয়োজন আছে বলে আমি মনে করি না। সরকারি ব্যাংক ছাড়াও কিছু বেসরকারি ব্যাংক রয়েছে যারা সরকারি ব্যাংকের মতোই সেবা দিয়ে থাকে।
এই ব্যাংকগুলোকে আপনি চোখ বুজে বিশ্বাস করতে পারেন। কিছু কিছু বেসরকারি ব্যাংক রয়েছে যারা সরকারি ব্যাংকের চেয়েও ভালো সার্ভিস দিয়ে থাকে। এই ব্যাংকগুলোতে সুদের পরিমাণও অনেক বেশি এবং কিছু ইন্টারেস্টিং সেবা ও রয়েছে তাদের। যদিও অনেকে বেসরকারি ব্যাংকে টাকা জমা দিতে আগ্রহী নয় তবে সরকারি ব্যাংকের চেয়ে বেশি সেবা পেলে তারা সিদ্ধান্ত পরিবর্তন করতেও পারে। সিদ্ধান্ত পরিবর্তন করার প্রধান কারণ হলো সরকারি ব্যাংকে অনেক বেশি ভিড় হয়। সরকারি ব্যাংকে লেনদেন করতে গেলে অনেক সময় লাইন ধরে অর্থ গ্রহণ ও প্রদান করতে হয়।
এ বিষয়গুলো অনেকের কাছে অস্বস্তি। অপরদিকে বেসরকারি ব্যাংকগুলোতে বেশ কয়েকটি কাউন্টার থাকে এবং টাকা লেনদেন করতে খুব বেশি সময় ব্যয় করতে হয় না। আপনি যদি সরকারি ব্যাংকের মাধ্যমে লেনদেন করতে চান সেক্ষেত্রেও আপনাকে সরকারি ব্যাংকের তালিকা সংগ্রহ করতে হবে আবার আপনি যদি সরকারি ব্যাংকের মাধ্যমে লেনদেন করতে না চান সেক্ষেত্রেও আপনাকে সরকারি ব্যাংকের তালিকা সংগ্রহ করতে হবে কারণ সরকারে ব্যাংকের তালিকা সংগ্রহ না করলে বুঝতে পারবেন না কোনগুলো সরকারি ব্যাংক এবং কোনগুলো বেসরকারি ব্যাংক।
বাংলাদেশের সবচেয়ে জনপ্রিয় দুটি সরকারি ব্যাংক হল অগ্রণী ব্যাংক ও সোনালী ব্যাংক। প্রায় প্রতিটি এলাকাতেই অগ্রণী ব্যাংক ও সোনালী ব্যাংকের শাখা রয়েছে। আপনারা যদি সরকারি ব্যাংকের মাধ্যমে লেনদেন করতে আগ্রহী হয়ে থাকেন তবে আপনার নিকটস্থ কোনো অগ্রণী ব্যাংক অথবা সোনালী ব্যাংকের শাখায় গিয়ে একাউন্ট খুলে ফেলতে পারেন। একাউন্ট খোলার পর থেকে নিয়মিত লেনদেন করতে শুরু করবেন এবং চাইলে কোন নির্দিষ্ট একটি বিষয়ের উপর ঋণ গ্রহণ করতে পারেন।
ঋণ গ্রহণ করার কাজটি যদিও একটু জটিল তারপরও চেষ্টা করলেই সম্ভব। এ বিষয়গুলো জানার জন্য সরাসরি ব্যাংকে গিয়ে সেখানকার তথ্য অফিসারের সাথে যোগাযোগ করতে হবে এবং তথ্য অফিসার যদি না থাকে তবে সরাসরি শাখা ব্যবস্থাপকের সাথে কথা বলতে পারেন। কোন একাউন্ট খুলতে গেলে আপনাকে কোন কাজ করতে হবে এবং অ্যাকাউন্ট খোলার পর থেকে কেমন সুযোগ-সুবিধা পাবেন সে বিষয়গুলো অ্যাকাউন্ট খোলার পূর্বেই জেনে নেওয়া উচিত। এছাড়াও আরও একটি কথা মাথায় রাখতে হবে প্রতিটি ব্যাংকে একই রকম সেবা প্রদান করা হয় না। কোন ব্যাংকে একাউন্ট খুললে আপনার জন্য সবচেয়ে ভালো হবে তা ভেবে নিয়েই অ্যাকাউন্ট খোলার সিদ্ধান্ত নিতে হবে।
আপনি যদি এখনো ব্যাংকে কোন একাউন্ট না করে থাকেন তবে আপনাকে বোকা বলা ছাড়া আর কোন উপায় নেই। এ যুগে এসে যদি ব্যাংকের মাধ্যমে লেনদেন না করেন অথবা নিজের ভবিষ্যতের জন্য সঞ্চয় না করেন তাহলে অনেক বেশি পিছিয়ে পড়বেন। ব্যাংকের মাধ্যমে আমরা দেশের যেকোনো স্থান থেকে টাকা পাঠাতে পারি । এখন এটিএম বুথের মাধ্যমে যে কোন স্থান থেকে টাকা তোলা সম্ভব।
এই সুযোগ-সুবিধা গুলো আপনি তখনও নিতে পারবেন যখন ব্যাংকে আপনার একটি একাউন্ট থাকবে। আশা করি আমাদের আজকের আর্টিকেল থেকে আপনারা জানতে পেরেছেন সরকারি ব্যাংক কোনগুলো এবং সেখানে কিভাবে একাউন্ট খুলতে হবে এবং অন্যান্য সেবা গ্রহণ করতে হবে। আশা করি পরে পোস্টগুলোতে আমরা এ সম্বন্ধে আরও বিস্তারিত আলোচনা করতে পারব। শেষ পর্যন্ত আমাদের সাথে থাকার জন্য অনেক ধন্যবাদ।