হিন্দু মেলার অপর নাম কি

হিন্দু মেলার অপর নাম কি

মেলা অর্থ আনন্দ উৎসব। সর্বপ্রথম মানবজাতির ইতিহাসে হিন্দুরাই মেলার আবির্ভাব ঘটেছে ‌।হিন্দুদের বারো মাসে তের পর্বন। ১৩ এরও বেশি পারবণ ও উৎসব হিন্দুরা প্রতিনিয়ত পালন করতে থাকে। সর্বপ্রথম হিন্দুরাই মেলা নামক উৎসবের জন্ম দিয়েছে। অতীতে যোগাযোগ ব্যবস্থা দুর্বল ছিল। বাজার ঘাট বেশি ছিল। তাই মেলার খুব প্রচলন ছিল। বর্তমানেও হিন্দুধর্ম অবলম্বীরা নানা ধরনের মেলার আয়োজন করে থাকে।
পৌষ পার্বণের মেলা বর্তমানে সবচেয়ে বড় মেলায় রূপান্তরিত হয়েছে। মেলাতে সকল ধর্মের মানুষ অংশগ্রহণ করে এবং ধর্ম এর ভেদাভেদ ভুলে সকলে আনন্দে মেতে উঠতে থাকে।

মেলা অর্থ আনন্দের অনুষ্ঠান। মেলা অর্থ হরেক হরেক রকম জিনিসপত্র সমাহার। মেলাতে সর্ব প্রকার প্রয়োজনীয় সামগ্রী স্বল্পমূল্যে বিক্রি করা হয়। প্রধানত মধ্যবিত্ত লোকজন মেলা নামক উৎসবের সাথে বেশি পরিচিত। মধ্যবিত্ত জনগণ মেলাতে তাদের চাহিদা অনুযায়ী এবং তাদের প্রয়োজনীয় দ্রব্য সামগ্রী ক্রয় করে থাকে। মেলাতে বাচ্চারা অনেক খুশি হয়। মেলাতে সাধারণ মানুষের জীবনধারণের সর্বপ্রকার জিনিসপত্র দেখতে পাওয়া যায়।

মেলা বাণিজ্যিকভাবে অনেক প্রভাব বিস্তার করে। মেলার অপর নাম বাণিজ্য। একটি মেলাতে আশেপাশের এবং দূর দূরান্তের মানুষ তাদের তৈরি কৃত জিনিসপত্র ক্রয় বিক্রয় করে থাকেন। বাণিজ্যিকভাবে মধ্যবিত্ত মানুষের জীবনে মেলার গুরুত্ব অপরিসীম। এই মেলার আবির্ভাব হয়েছিল সর্বপ্রথম ভারতবর্ষে। প্রাচীন ভারতবর্ষের যখন ব্রিটিশ শাসন করেছিল তখন ব্রিটিশদের অত্যাচারের ভারতবর্ষের প্রাচীন হিন্দু সম্প্রদায় মেলার আয়োজন করেছিল। সেটা ছিল ইতিহাসে সর্বপ্রথম মেলা। সেখান থেকে আজ ২০০ -৩০০ বছর পরও মেলার প্রচলন রয়ে গেছে।

আমাদের বাংলাদেশ একটি দরিদ্র দেশ। বর্তমানে বাংলাদেশ অনেক উন্নতি লাভ করেছে। নিম্ন মধ্য বিত্ত এই বাংলাদেশের আজও মেলার প্রচলন রয়েছে। বাংলাদেশী সবাই মেলার সঙ্গে ভালোভাবে পরিচিত। আমাদের এই দেশ মুসলিম দেশ ‌। মুসলিম প্রধান দেশ হলেও আমাদের দেশে হিন্দুদের ব্যাপক গুরুত্ব রয়েছে। হিন্দুরা আমাদের দেশের প্রেক্ষাপটে অর্থনৈতিক ভাবে প্রভাব বিস্তার করে। হিন্দুদের বিভিন্ন অনুষ্ঠানে মেলার আয়োজন মুসলিম কর্তৃপক্ষ থেকেই করা হয়ে থাকে। তাই বাংলাদেশের সাধারণ জীবনের মেলায় একটি অতি পরিচিত, অতি আনন্দের একটা বিষয়।

১৮৬৭ সালের এপ্রিল মাসে ঠাকুর পরিবারের সহযোগিতায় কলকাতায় প্রাচীন হিন্দু সম্প্রদায় প্রথম হিন্দু মেলা আয়োজিত হয়েছিল। নারায়ন বসু , দ্বিজেন্দ্রনাথ ঠাকুর ও নবগোপাল মিত্রের যৌথ উদ্যোগে প্রথম হিন্দু মেলার আয়োজন করা হয়। এই মেলার অপর বৈশিষ্ট্য ছিল দেশীয় শিল্পোৎপাদনে উৎসাহ দান,দেশীয় প্রতিক সমূহের প্রতি আনুগত্য । এই জন্য এই মেলাকে বিংশ শতাব্দীর প্রথমার্ধের স্বদেশী আন্দোলনের পূর্বসূরি বলে মনে করা হয়। হিন্দু মেলা কলকাতার বাঙালি সমাজের সামাজিক ও সাংস্কৃতিক পরিবর্তনটি নির্দেশ করে। ১৮৩০-এর দশকে আন্দোলন বাংলায় দুটি পরস্পরবিরোধী সমাজচেতনার জন্ম দিয়েছিল।

প্রাচীন ভারতবর্ষের ইংরেজরা শাসন ও শোষণ করত। প্রাচীন হিন্দুদের উপর নির্যাতন করতো। বাঙ্গালীদের ধন-সম্পদ বিঘা জমি তারা সবকিছু দখল করে নিয়েছিল। বাঙ্গালীদের প্রাপ্য বাঙালি কে তারা দিত না। তারা বিজনেস করতে মিথ্যা বলে বাঙালিদের সকল ধন-সম্পদ নিজেরা আত্মসাৎ করত। বাঙালি মেয়েদের উপর ধর্ষণ নির্যাতন চালাত। ইংরেজদের এ সকল নির্যাতনের বিরুদ্ধে বাঙালি জনগণ আন্দোলন গড়ে তোলেন। হিন্দু সম্প্রদায় নানা ধরনের চুক্তি এবং অনেক মিশনের মাধ্যমে ব্রিটিশ শাসনের পতন ঘটায়। অবশেষে ভারতবর্ষে একটি স্বাধীন রাষ্ট্রে পরিণত হয়। ভারতবর্ষের স্বাধীন হওয়ার পর। দাঙ্গাবাদের তৎকালীন গোড়া হিন্দু সম্প্রদায় এবং প্রতিবাদী মুসলিমদের মধ্যে।

হিন্দু জনগোষ্ঠী সংখ্যাগরিষ্ঠ হওয়ায় তারা মুসলিমদের সর্ব কিছু থেকে বঞ্চিত করে। সংখ্যালঘিষ্ঠ মুসলিম ধর্ম অবলম্বীগণ ভারত বিভক্ত হয়ে একটি নতুন রাষ্ট্রের জন্ম দেয়। আর সেটার নাম হলো পাকিস্তান। তারপর পাকিস্তান বিভক্ত হয়ে পূর্ব পাকিস্তান এবং পশ্চিম পাকিস্তানের ভাগ হয়ে যায়। পশ্চিম পাকিস্তান অর্থাৎ বর্তমান পাকিস্তান রাষ্ট্র সব সময় পূর্ব পাকিস্তানের উপর নির্যাতন চালাত। পাকিস্থানের নিরীহ বাঙালি কে কারা বঞ্চিত করেছে। সর্বপ্রকার সুযোগ সুবিধা এবং জাতিসংঘ থেকে প্রাপ্ত ভাতা পশ্চিম পাকিস্তান একাই আত্মসাৎ করতো। তারপর অনেক রক্ত ক্ষয় যুদ্ধের পর পূর্ব পাকিস্তান পশ্চিম পাকিস্তান থেকে আলাদা হয় এবং জন্ম দেয় এক স্বাধীন নতুন রাষ্ট্রের। বর্তমানে পূর্ব পাকিস্তান বাংলাদেশ নামে পরিচিত।

ইতিহাসে সর্বপ্রথম মেলার উদ্ভব ঘটায় ভারতবর্ষে হিন্দু সম্প্রদায়।

Similar Posts

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *