কিন্ডারগার্টেন স্কুলের নামের তালিকা
পরিবারের নতুন সদস্য আসার পর থেকেই তাকে নিয়ে আমরা নানারকম পরিকল্পনা করতে থাকি। আস্তে আস্তে সেই সদস্য যখন এক পা দু পা করে হাঁটতে শুরু করে তখন থেকেই তার শিক্ষা জীবন নিয়ে আমরা চিন্তিত হয়ে পড়ি। সে যখন কথা বলতে শুরু করে এবং সবকিছু বুঝতে শিখে তখনই তাকে স্কুলে পাঠানোর সিদ্ধান্ত নিয়ে থাকি। এই সময়টি তার জীবনের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ও আনন্দের সময়। পিতা মাতা হিসেবে আমাদের কাছেও ওই মুহূর্তটি অনেক মূল্যবান। পিতা-মাতা হিসেবে আমরাও চাই আমাদের সন্তানরা সুশিক্ষায় শিক্ষিত হোক। তবে অভিভাবকরা এই সময় অনেক বেশি চিন্তিত থাকে কারণ তাদের সন্তানকে কোন স্কুলে ভর্তি করাবে এই সিদ্ধান্ত নিতে পারেনা।
আপনারা যারা এমন পরিস্থিতিতে রয়েছেন এবং সিদ্ধান্ত নিতে পারছেন না আপনার সম্পর্কে কোথায় ভর্তি করাবেন তাদের জন্যই আমরা সারা দেশের নামকরা কিন্ডারগার্টেন স্কুলগুলোর তালিকা নিয়ে এলাম। আশা করি এই তালিকা থেকে আপনারা আপনার সন্তানের জন্য সবচেয়ে ভালো স্কুলটি বেছে নিতে পারবেন। এছাড়াও আপনার সন্তানকে কিন্ডারগার্ডেন স্কুলে ভর্তি করার সময় কোন বিষয়গুলো মাথায় রাখতে হবে তা নিয়েও আলোচনা করব এই আর্টিকেলে। আশা করি আপনার শেষ পর্যন্ত আমাদের সাথে থেকে দেশের বিখ্যাত কিন্ডারগার্টেন স্কুলগুলোর তালিকা সংগ্রহ করে নিবেন।
কিন্ডারগার্টেন স্কুলে আপনার সন্তানকে ভর্তি করার আগে স্কুল সম্বন্ধে সকল তথ্য জেনে নিতে হবে। স্কুলে কিভাবে পাঠদান করানো হয় এবং আপনার বাচ্চার মনোরঞ্জনের উপায় শেষ করে আছে কিনা সে বিষয়গুলো খেয়াল রাখতে হবে। স্কুলের মধ্যে অবশ্যই খেলাধুলার উপকরণ থাকতে হবে কারণ ছোট বাচ্চারা সব সময় পড়াশোনায় মনোযোগ দিতে পারবে না। ছোট বাচ্চাদের পড়াতে হবে মজা করে। বাংলাদেশের বেশিরভাগ কিন্ডারগার্টেন স্কুল গুলোতে আনন্দের সাথে পাঠদান করানো হয়। তবে এর মধ্যে সবচেয়ে বেস্ট স্কুলটিতে আপনার সন্তানকে ভর্তি করাতে হবে। কিন্ডারগার্টেন কথাটির সঠিক অর্থ হয়তো আপনার অনেকে জানেন না।
কিন্ডারগার্টেন বলতে আসলে বোঝায় খেলার ছলে শিক্ষা প্রদান করা। ছোট বাচ্চাদের হ্যান্ডেল করার অভিজ্ঞতা যাদের আছে তারা খুব ভালো করে জানেন এদেরকে সামলে রাখা কতটা কঠিন। ছোট বাচ্চাদের সামনে রাখার জন্য নানারকম ছলচাতুরি করতে হয়। অনেক সময় তাদের সাথে অভিনয় করতে হয়। অভিনয়ের মাধ্যমে অনেক বিষয় তাদেরকে বোঝাতে হয়। কিন্ডারগার্টেন স্কুলগুলো মূলত এই কাজটি করে থাকে। তারা খেলতে খেলতে বাচ্চাদের পাঠদান করেন। এছাড়াও কিন্ডারগার্টেন স্কুলগুলো র আরো কিছু বৈশিষ্ট্য রয়েছে যেগুলো এখন তুলে ধরব।
একটি শিশু কিভাবে বড় হয়ে উঠবে তা নির্ভর করে তার বাল্য শিক্ষার উপর। ছোট থেকে আপনি তাকে যেমন যেমন শিক্ষা নেবেন সে ঠিক সেই বিষয়গুলোই শিখে বড় হবে। একজন শিশুকে ছোটবেলায় সামাজিকতা শিখাতে হবে। সামাজিকতার ধারণা দেওয়ার জন্য এমন কিছু করতে হবে যেন সে খুব সহজেই বিষয়টি সম্পর্কে স্পষ্ট ধারণা পায়। সে যেন তার সহপাঠীদের সাথে খুব সহজে মিশে যেতে পারে এমন ব্যবস্থা করে দিতে হবে। যদি একে অপরের সাথে মেলামেশা করার সুযোগ পায় তাহলে একে অপরের কাছ থেকে নতুন অনেক কিছু শিখার সুযোগ পাবে। ছোটবেলার যদি কোন শিশুকে অন্য কোন বাচ্চার সাথে মিশতে না দেওয়া হয় তবে তারা নতুন কিছু শিখতে পারবে না।
একে অন্যের সাথে মেলামেশা না করলে নিজেকে উপস্থাপন করার ক্ষমতা তাদের মধ্যে তৈরি হবে না। তারা বন্ধুদের কাছ থেকে অনেক নতুন নতুন শব্দ শিখতে পারবে এবং বাস্তব জীবনে প্রয়োগ করতে পারবে। কিন্ডারগার্টেন স্কুলের আরো কিছু বৈশিষ্ট্য হলো এখানে শিশুদের উপর কোন ধরনের চাপ প্রয়োগ না করেই নতুন কিছু শেখানোর চেষ্টা করা হয়। কিন্ডারগার্টেন স্কুলের বৈশিষ্ট্য গুলো তো আপনারা জানলেন, চলুন এবার দেখা যাক বাংলাদেশের কিন্ডারগার্টেন স্কুল গুলোর মধ্যে একটি পছন্দ করতে গেলে আপনাকে কোন বিষয়গুলো ভেবে সিদ্ধান্ত নিতে হবে।
আপনার শিশুকে কিন্ডারগার্টেন স্কুলে ভর্তি করতে গেলে প্রথমে দেখুন স্কুলটিতে বড় মাঠ আছে কিনা। বড় মাঠ ছাড়াও দেখতে হবে স্কুলের মধ্যে কোন বাগান বা গাছপালা রয়েছে কিনা। স্কুলে যদি একটি বড় মাঠ থাকে তবে বাচ্চারা খেলাধুলা করার জন্য যথেষ্ট স্পেস পাবে। যদি স্কুলের ক্যাম্পাসে জায়গা খুব কম থাকে তাহলে বাচ্চারা খেলাধুলা করতে না পেরে হাপিয়ে উঠবে। বদ্ধ জায়গায় কোন মানুষই খুব সহজে মানিয়ে নিতে পারে না নিজেকে।
খোলা আলো বাতাসে যে কোন কাজে খুব ভালো মনোযোগ দেওয়া যায়। তাই আপনি আপনার সন্তানকে যে স্কুলে ভর্তি করানোর কথা ভাবছেন সেই স্কুলটিতে নিজে গিয়ে দেখে আসুন সেখানকার পরিবেশ কেমন। যদি যথেষ্ট আলো বাতাস থাকে এবং বড় মাঠ থাকে তবে সেখানে ভর্তি করার সিদ্ধান্ত নিতে পারেন। এরপর আপনাকে দেখতে হবে স্কুলের মধ্যে খেলাধুলা করার যথেষ্ট উপকরণ রয়েছে কিনা। ছোট বাচ্চারা প্রথম দিকেই স্কুলে যেতে চায় না। যদি স্কুলে খেলাধুলা করার যথেষ্ট উপকরণ থাকে তবে তারা খেলাধুলা করার জন্য হলেও স্কুলে যেতে চাইবে। যদি খেলাধুলা করার উপকরণ না থাকে তবে তারা স্কুলে যাবার প্রতি আগ্রহী হবে না। তাই আপনি নিজে গিয়ে এই বিষয়গুলো যাচাই করে আসবেন।
কিন্ডারগার্টেনে নিজের বাচ্চাকে ভর্তি করার সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগে বেশ কয়েকদিন স্কুলে গিয়ে সেখানকার পড়ানোর ধরন যাচাই করতে হবে। অভিভাবকরা কয়েকবার দেখলেই বুঝে যাবেন ওই স্কুলে তার সন্তানকে ভর্তি করানো যাবে কিনা। কোন কোন বিষয়ে পড়ানো হচ্ছে, আপনার সন্তানের পক্ষে ওই বিষয়গুলো পড়া সম্ভব কিনা তা ভালো ভাবে ভেবে দেখবেন। যদি দেখতে পান সেখানে যে বিষয়গুলো পড়ানো হচ্ছে তা আপনার সন্তানের পক্ষে এখনই পড়া সম্ভব নয় তবে আরো কিছুদিন পর ভর্তি করানোর সিদ্ধান্ত গ্রহণ করুন। প্রথমদিকে ছোট বাচ্চাদের খুব বেশি চাপ দিবেন না। প্রথম থেকে চাপ দিলে তারা পড়াশোনা করতে অনেক ভয় পাবে। পড়াশোনার সাথে তাদের সম্পর্ক যেন মধুর হয়ে ওঠে তা নিশ্চিত করতে হবে।
এখন জেনে নেওয়া যাক কেন কিন্ডারগার্টেন স্কুলের তালিকা আমাদের প্রয়োজন হবে। কিন্ডারগার্টেন স্কুলের তালিকা গুলো আপনার নিজের প্রয়োজন না হলেও আপনার ভাই বোন অথবা বন্ধু-বান্ধবের সন্তানের জন্য প্রয়োজন হতে পারে। শুভাকাঙ্ক্ষী হিসেবে আপনি নিশ্চয়ই চাইবেন তারা যেন খুব সহজে এই তালিকাগুলো সংগ্রহ করে নিতে পারে। তাই তাদের কাজটি আরো সহজ করে দিতে আপনি সকল কিন্ডারগার্ডেন স্কুলের তালিকা সংগ্রহ করে তাদের সাথে শেয়ার করতে পারেন। কিন্ডারগার্টেন স্কুলের তালিকা সংগ্রহ করা খুবই সহজ। যদিও সব স্কুলের তালিকা আপনার প্রয়োজন হবে না শুধুমাত্র জনপ্রিয় ও মানসম্মত স্কুলগুলোর তালিকা সংগ্রহ করলেই চলবে। তালিকা থেকে মানসম্মত কয়েকটি স্কুল সিলেক্ট করে যাচাই-বাছাই করে আত্মার সন্ধানকে সেখানে ভর্তি করার জন্য প্রস্তুতি নিয়ে ফেলুন।
তবে এই বিষয় নিয়ে এমন কোন মানুষের সাথে কথা বলে দেখতে পারেন যারা এর আগে নিজের সন্তানকে কিন্ডারগার্টেন স্কুলে ভর্তি করিয়েছেন। তাদের মাধ্যমে আপনি অনেক অজানা তথ্য জেনে নিতে পারবেন যেগুলো হয়তো নিজে যাচাই করেও জানা সম্ভব নয়। আপনার জেলার মধ্যে যে কয়েকটি কিন্ডারগার্টেন স্কুল আছে সেই সবগুলো স্কুলে গিয়ে সেখানকার সুবিধা ও অসুবিধা গুলো নোট করে ফেলুন। আশা করি এই প্রক্রিয়ায় কাজ করলে খুব সহজেই সবচেয়ে ভালো ও মানসম্মত স্কুলে আপনার সন্তানকে ভর্তি করাতে পারবেন। এ বিষয় নিয়ে যদি আরো কোন তথ্য জানার থাকে তবে কমেন্ট বক্সে এসে প্রশ্ন করুন। আশা করি আপনাদের সঠিক পরামর্শ দিয়ে সাহায্য করতে পারব। আপনার সন্তানের শিক্ষার ব্যাপারে আরো বেশি সচেতন হন।