৬৪ জেলার জেলা প্রশাসকের নামের তালিকা । ৬৪ জেলার ডিসিদের নামের তালিকা
আপনাকে যদি প্রশ্ন করা হয় বাংলাদেশে কয়টি জেলা রয়েছে তবে খুব সহজেই উত্তরটি দিয়ে দেবেন। বাংলাদেশের ৬৪ টি জেলা রয়েছে। আপনাদের নিশ্চয়ই জানার কথা বাংলাদেশের ৬৪ জেলায় ৬৪ জন জেলা প্রশাসক রয়েছে। আমরা অনেকেই হয়তো জানি না জেলা প্রশাসক কাদের বলা হয়। ইংরেজিতে সংক্ষেপে আমরা যাদের ডিসি বলে থাকি বাংলাতে তাদের জেলা প্রশাসক বলা হয়। একজন জেলা প্রশাসক একটি জেলার সর্বেসর্বা। ৬৪ জেলার নাম তো খুব সহজেই আপনারা বলে দিবেন, কিন্তু ৬৪ জন জেলা প্রশাসকের নাম কি খুব সহজে বলতে পারবেন? যদিও ৬৪ জন জেলা প্রশাসকের নাম আমাদের সবার দরকার হবে না কিন্তু নিজ নিজ জেলার জেলা প্রশাসকের নাম ও ফোন নাম্বার হয়তো আমাদের সবারই দরকার হবে।
আপনারা অনেকেই চৌষট্টি জন জেলা প্রশাসকের নাম ও তাদের ফোন নাম্বার সংগ্রহের জন্য অনেক চেষ্টা করেছেন কিন্তু কোনভাবেই খুঁজে বের করতে পারেননি। আজ আমরা আপনাদের জানিয়ে দেবো কিভাবে 64 জন জেলা প্রশাসকের ফোন নাম্বার সংগ্রহ করা সম্ভব এবং তাদের নাম জেনে নেওয়া সম্ভব। নাম ও ফোন নাম্বার জেনে নেওয়ার আগে আপনাদের জেনে নিতে একজন জেলা প্রশাসক কি কি কাজ করে থাকেন। একজন জেলা প্রশাসকের কাজের পরিধি কতটুকু তা জেনে নিতে পারলে আপনারা অনেক অজানা তথ্য জানতে পারবেন। চলুন দেখা যাক একজন জেলা প্রশাসক কি ধরনের কাজ করে থাকেন।
জেলা প্রশাসকের কাজের পরিধি বিস্তর। একজন জেলা প্রশাসক একটি জেলার কর্তা ব্যক্তি। জেলা প্রশাসককে ঘিরেই একটি জেলার সকল কাজ সম্পন্ন হয়ে থাকে। তাই একজন জেলা প্রশাসককে অনেক দায়িত্ব পালন করতে হয়। একজন জেলা প্রশাসক সাধারণত তিন ধরনের কাজ করে থাকেন। প্রথমত একজন জেলা প্রশাসক প্রশাসনিক কাজ করে থাকেন। দ্বিতীয়তঃ একজন জেলা প্রশাসককে রাজস্ব সংক্রান্ত অথবা ওই জেলার অর্থনীতি সংক্রান্ত সকল কাজ করতে হয়। এই দুইটি কাজ হারাও একজন জেলা প্রশাসককে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষার কাজগুলোও সঠিকভাবে করে যেতে হয়।। আপনারা নিশ্চয়ই এখন হয়তো ভাবছেন এই তিন ধরনের কাজ জেলা প্রশাসক কিভাবে করে থাকে।
প্রথমে আসুন প্রশাসনিক কাজের দিকে। প্রশাসনিক কাজের ক্ষেত্রে একজন জেলা প্রশাসককে কেন্দ্র থেকে আসা যে কোন সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন করতে হয়। আপনারা নিশ্চয়ই জানেন একটি জেলার মধ্যে অনেক সরকারি অফিস থাকে। এই সবগুলো সরকারি অফিসের মধ্যে সমন্বয় করতে হয় জেলা প্রশাসককে। জেলা প্রশাসকের প্রশাসনিক কাজগুলো সম্বন্ধে আপনারা স্পষ্ট ধারণা পেলেন। বাংলাদেশের প্রতিটি নাগরিক কে কর দিতে হয়। যেমন ধরেন আমাদের যা জমিজমা আছে তার খাজনা প্রদান করতে হয় প্রতিবছর। জেলা প্রশাসক রাজস্ব আদায়ের কাজগুলো নিষ্ঠার সাথে করে থাকেন। এছাড়াও একটি জেলার আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা করার দায়িত্ব তার হাতে। আইনশৃঙ্খলা রক্ষার জন্য প্রতিটি জেলায় বেশ কয়েকটি থানা রয়েছে যার সবগুলো দেখভাল করতে হয় জেলা প্রশাসক কে যা তিনি পুলিশ প্রশাসনের মাধ্যমে করে থাকেন।
আমাদের অনেকের ভেতরেই আগ্রহ রয়েছে জেলা প্রশাসক সম্বন্ধে বিভিন্ন তথ্য জানার। যেমন একজন জেলা প্রশাসক হতে কি করা লাগে, জেলা প্রশাসকের বেতন কত, জেলা প্রশাসকের ক্ষমতা কতটুকু, জেলা প্রশাসকের কাজের পরিধি কতটুকু এই বিষয়গুলো নিয়ে সাধারণ মানুষের মনে অনেক কৌতূহল কাজ করে। অনেকেই আমাদের কমেন্ট বক্সে এই বিষয়গুলো নিয়ে আলোচনা করার জন্য বলেছিলেন। ইতিমধ্যেই আমরা জেলা প্রশাসকের কাজের পরিধি নিয়ে আলোচনা করেছি। তবে কাজের পরিধির পাশাপাশি আপনাদের জেনে নেওয়া উচিত একজন জেলা প্রশাসক হতে গেলে কি করা লাগে। আপনারা নিশ্চয়ই জানেন প্রশাসনিক কর্মকর্তারা সব সময়ই বিসিএস পরীক্ষার মাধ্যমে নিয়োগ লাভ করে। তবে বিসিএস ক্যাডার থেকে পদোন্নতিপ্রাপ্ত কর্মকর্তাদের মধ্য থেকে জেলা প্রশাসক নিয়োগ করা হয়।
একজন জেলা প্রশাসক হতে গেলে বেশ অভিজ্ঞ ও বুদ্ধিমান হতে হবে কেননা একটি জেলার দায়িত্ব তাকে পালন করতে হবে। আমরা এর আগে আপনাদের বলেছিলাম একজন জেলা প্রশাসক জেলার মধ্যে থাকা প্রতিটি অফিসের মধ্যে সমন্বয় সাধন করে থাকে। এর পাশাপাশি জেলা প্রশাসক আরো কিছু কাজ করে থাকে যেমন জেলার মধ্যে যেকোনো ধরনের দুর্ঘটনা ঘটলে অথবা প্রাকৃতিক দুর্যোগ আঘাত করলে তা থেকে সাধারণ জনগণকে কিভাবে রক্ষা করা যায় সে কাজগুলো তাকে করতে হয়। আবার সাধারন নির্বাচন অথবা স্থানীয় নির্বাচন গুলো ঠিকভাবে দেখাশোনার কাজগুলো তাকে করতে হয়।
যেহেতু একজন জেলা প্রশাসক অনেক বড় বড় দায়িত্ব পালন করে থাকেন তাই সাধারণ মানুষের পক্ষে তাদের সাথে দেখা করা মোটেও সহজ কাজ নয়। আপনি চাইলেই একজন জেলা প্রশাসকের সাথে সরাসরি দেখা করতে পারবেন না তবে আপনি যদি তার দৃষ্টি আকর্ষণ করতে পারেন তবে তিনি নিশ্চয়ই আপনার সাথে দেখা করবেন। এখন আপনাদের জানা উচিত একজন জেলা প্রশাসকের সাথে দেখা করে আপনি কোন ধরনের সমস্যাগুলো সমাধান করে নিতে পারবেন।
আপনি যদি অর্থনৈতিক কোন সমস্যায় পড়ে থাকেন তবে জেলা প্রশাসক সে সমস্যা হয়তো সমাধান করতে পারবেন না তবে আপনি যদি আইনি কোন জটিলতায় পড়ে থাকেন তবে জেলা প্রশাসক আপনাকে পরামর্শ দিতে পারেন। আমরা যে কোন সমস্যায় পড়লে সাধারণত স্থানীয় কোন প্রতিনিধির কাছে যাই অথবা স্থানীয় সরকারে কর্মকর্তাদের কাছে সাহায্য নেওয়ার চেষ্টা করি। যেহেতু একজন জেলা প্রশাসককে বেশ কয়েকটি উপজেলার দেখাশোনা করতে হয় তাই ছোটখাটো বিষয় নিয়ে তার সাথে দেখা না করা উচিত। ছোটখাটো সমস্যা গুলো উপজেলা নির্বাহী অফিসারের মাধ্যমে সমাধান করা সম্ভব।
আপনাদের অনেকের মনে প্রশ্ন রয়েছে মোবাইল ফোনের মাধ্যমে জেলা প্রশাসকের সাথে কথা বলা সম্ভব কিনা। মোবাইল ফোনের মাধ্যমে জেলা প্রশাসকের সাথে কথা বলা সম্ভব যদি আপনি তার ব্যক্তিগত ফোনে যোগাযোগ করতে পারেন। জেলা প্রশাসকরা সাধারণত ব্যক্তিগত ফোন নাম্বার কারো সাথে শেয়ার করবেন না কারণ তাদের অনেক ব্যস্ত সময় পার করতে হয়। এছাড়াও নিয়মিত কেন্দ্রের সাথে তাদের যোগাযোগ করতে হয় এবং কেন্দ্রের নির্দেশে বিভিন্ন কাজে ব্যস্ত থাকতে হয়। হাজার ব্যস্ততার মধ্যে সাধারণ মানুষের সাথে ছোটখাটো বিষয়গুলো নিয়ে হয়তো তিনি আলোচনা করতে চাইবেন না কারণ এতে তার উপর দেওয়া দায়িত্ব তিনি সঠিকভাবে পালন করতে পারবেন না। এই বিষয়গুলি আমাদের বুঝতে হবে এবং চেষ্টা করতে হবে যেন আমরা জেলা প্রশাসকের সাথে ফোনের মাধ্যমে যোগাযোগ করতে না যাই। তবে এরপরও যদি আপনারা কেউ জেলা প্রশাসক সাথে দেখা করতেই চান তবে সরাসরি না দিয়ে অন্য কারো মাধ্যমে দেখা করার চেষ্টা করুন।
আপনার অনেকেই জানতে চেয়েছেন জেলা প্রশাসকের ফোন নাম্বার সংগ্রহ করা সম্ভব হবে কিনা। জেলা প্রশাসকের ফোন নাম্বার সংগ্রহ করা সম্ভব যদি আপনি সঠিক জায়গায় যেতে পারেন। শুধুমাত্র অনলাইনে খোঁজাখুঁজি করেই জেলা প্রশাসকের ফোন নাম্বার সংগ্রহ করতে পারবেন না। আমরা চেষ্টা করব ৬৪ টি জেলার জেলা প্রশাসকের নাম ও তাদের ফোন নাম্বার আপনাদের জন্য শেয়ার করতে। তবে একটি বিষয় আপনাদের মাথায় রাখতে হবে, জেলা প্রশাসকরা সবসময়ই একটি পদেই থাকেন না।
আপনি যে জেলা প্রশাসনের সাথে দেখা করতে চাইছেন তিনি যদি পদোন্নতি পান তবে হয়তো তার সাথে দেখা করা আর সম্ভব হবে না কারণ তিনি জেলা প্রশাসকের পরে তখন থাকবেন না। তাই জেলা প্রশাসকের ফোন নম্বর সংগ্রহের পর ধরে নিবেন না যে এই নম্বরেই সব সময় তার সাথে যোগাযোগ করতে পারবেন কিংবা এই নম্বরটি তিনি সবসময় ব্যবহার করবেন। আমি আবারও বলছি, আপনার জীবনের যেকোনো সমস্যাগুলো নিজে সমাধানের চেষ্টা করুন অথবা স্থানীয় সরকারে কর্মকর্তাদের সাথে শেয়ার করে সমাধানের চেষ্টা করুন। যেকোনো বিষয়ে জেলা প্রশাসকের সাথে দেখা করার ইচ্ছা পোষণ না করাই ভালো।