মসলার নামের তালিকা

মসলার নামের তালিকা

রান্নাবান্না করতে যারা ভীষণ পছন্দ করেন তাদের জন্য বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ পরামর্শ নিয়ে চলে এলাম। যারা কখনো রান্না করেননি অথবা নতুন নতুন রান্না শিখছেন তাদের জন্য এই পোস্টটি ভীষণ উপকারে আসবে। আজকের পোস্টে আমরা বিভিন্ন প্রকার মসলা নিয়ে আলোচনা করব যেগুলো খাবারের স্বাদ কয়েক গুণ বাড়িয়ে দিতে পারে। খাবারে ব্যবহার করা ছাড়াও এই মসলাগুলো আপনারা আরো অনেক কাজে ব্যবহার করতে পারবেন। আমরা দৈনন্দিন জীবনে ব্যবহার করি এমন মসলা নিয়েও থাকবে আলোচনা।

এ মসলাগুলোর কতটা গুণ রয়েছে তা বিস্তারিত তুলে ধরবো এই লেখায়। আপনারা যারা খুব একটা মসলা চেনেন না তারা নিশ্চয়ই আমাদের সাথে থাকবেন। রান্না ভালভাবে শিখতে গেলে প্রতিটি মসলার সাথে পরিচিত হতে হবে। ঠিকভাবে মসলা চিনতে না পারলে এগুলো রান্নায় ব্যবহার করতে পারবেন না। রান্নার স্বাদ নির্ভর করে পরিমাণ মত মসলার ব্যবহারের উপর। লবণ তেল ছাড়াও একজন রাঁধুনি যদি অন্যান্য মসলাগুলো সঠিকভাবে ব্যবহার করতে পারে তবে যেকোনো খাবার অনেক সুস্বাদু হয়ে উঠবে। মসলা নিয়ে আলোচনা ছাড়াও আমরা আপনাদের জানিয়ে দেবো কি কারনে এই মসলাগুলো সম্বন্ধে আপনাদের জানা দরকার এবং মসলার তালিকা আপনি কিভাবে সংগ্রহ করতে পারবেন।

বর্তমান সময়ের মানুষ নিজের রান্না করার চেয়ে অর্ডার করে খাবার খাওয়া বেশি সুবিধা জনক মনে করে। এ কারণেই এখন কেউ আর সেই ভাবে রান্না শিখতে চায় না। যদিও অনেকে ছোটবেলা থেকেই রান্নার প্রতি ভীষণ আগ্রহী হয়ে থাকে। তবে অনেকে হয়তো জানেই না রান্নাঘরে কি কি জিনিসপত্র থাকে। রান্না শেখার প্রয়োজনীয়তা কতটুকু তা নিশ্চয়ই আপনাদের বলে দিতে হবে না। যারা কঠিন পরিস্থিতিতে পড়েছেন তারা খুব ভালো করে জানেন রান্না শিখে রাখা আপনাকে জীবনযুদ্ধে কতটা এগিয়ে রাখতে পারে। আমাদের জীবনের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ কাজ হলো খাওয়া। আমরা ঠিকমতো খাওয়া-দাওয়া না করলে কাজ করার শক্তি কোনোভাবেই পাবো না।

জীবন সুন্দরভাবে উপভোগ করার জন্য হলেও নিয়মিত খাওয়া দাওয়া করতে হবে। আর নিয়মিত খাওয়া দাওয়া করার জন্য রান্না শেখা অপরিহার্য। যদিও রান্না না করেও আমরা অনেক খাবার খেতে পারি। আবার আমরা কাঁচা শাকসবজি রান্না করেও খেতে পারি। তবে রান্না করা খাবার খুব সহজে হজম হয় এবং অনেক সুস্বাদু হয়। যেহেতু মানুষ পৃথিবীর শ্রেষ্ঠ জীব তাই তারা সব সময় চাইবে সবচেয়ে ভালো খাবার গ্রহণ করতে। আর সর্বোৎকৃষ্ট খাদ্য গ্রহণের জন্য রান্না করে খাওয়া ছাড়া আর কোন উপায় নেই।

এই আলোচনার পর নিশ্চয়ই আপনাকে বুঝিয়ে দিতে হবে না আমরা কোন উদ্দেশ্য নিয়ে রান্না করে থাকি। রান্না করার উদ্দেশ্য হলো খাবারের স্বাদ বাড়ানো। কাঁচা মাংস অথবা শাকসবজি খেলে আমরা কখনই হজম করতে পারবোনা। আপনারা জানেন গরু অথবা ছাগল কিংবা অন্যান্য চতুষ্পদী জন্তুর পাকস্থলী চার প্রকোষ্ঠ বিশিষ্ট। চতুষ্পদী জন্তুর পাকস্থলী চার প্রকোষ্ঠ বিশিষ্ট হলেও মানুষের পাকস্থলী কিন্তু দুই প্রকোষ্ঠ বিশিষ্ট। তাই গরু ছাগল অথবা অন্যান্য প্রাণীরা যত সহজে ঘাস লতাপাতা অথবা কাঁচা মাংস হজম করতে পারে মানুষের পক্ষে তেমনটা করা সম্ভব নয়।

যদিও একটা সময় মানুষ হোক রান্না না করা খাবার খেতো তবে এখন তো আর সেই যুগ নেই। আদিম যুগের মানুষ স্বীকার করে সাথে সাথেই কাঁচা মাংস খেয়ে নিতো আগুন আবিষ্কারের আগ পর্যন্ত। আগুন আবিষ্কারের পর থেকেই মানুষ আগুনে ঝলসে মাংস খাওয়া শুরু করে। আস্তে আস্তে হাজার বছর পরে এসে এখন মাংস রান্না করতে গেলে আমাদের হরেক রকম মসলা ব্যবহার করতে হয়। আমরা নিয়মিত রেস্টুরেন্টে যেসব খাবারগুলো খাই তার সবগুলোতেই বিভিন্ন ধরনের মসলা ব্যবহার করা হয়। দেশি-বিদেশি এসব মসলার ব্যবহারের কারণেই খাবারের স্বাদ অনেক বেশি হয়।

এশিয়া মহাদেশে কয়েকটি দেশ রয়েছে যে দেশগুলো প্রচুর পরিমাণ মসলা উৎপাদন করে। মসলা উৎপাদনে এগিয়ে থাকা দেশগুলোর মধ্যে ভারত ও শ্রীলংকা অন্যতম। ভারত ও শ্রীলংকা পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে মসলা রপ্তানি করে। ভারত অনেক বড় দেশ হওয়ায় এখানে বিভিন্ন প্রকারের মসলা উৎপাদন করা সহজ। ভারতের বিভিন্ন প্রদেশে প্রতিবছর যে পরিমাণ মসলা উৎপাদন হয় তাতে নিজের দেশের চাহিদা মিটিয়েও পৃথিবীর অনেক বড় বড় দেশে মসলা রপ্তানি করা সম্ভব। বাংলাদেশের এসব মসলা আসে তার বেশিরভাগই ভারত থেকে।

সাধারণত সমুদ্রের ধারের দীপগুলোতে মূল্যবান মসলাগুলো উৎপাদিত হয়ে থাকে। বাংলাদেশেও মসলার উৎপাদন হয় তবে তা খুব একটা বেশি নয়। আমরা প্রতিদিন রান্নায় যেসব মসলাগুলো ব্যবহার করি তার বেশিরভাগই আমাদের দেশের ৬০% মানুষের অজানা। এর কারণ হলো রান্নার প্রতি আমাদের দেশের মানুষের অনাগ্রহ। যেখানে প্রতিটি মানুষের রান্না শেখা উচিত সেখানে আমাদের দেশের মানুষ অন্যের উপর নির্ভর করে থাকে।

বর্তমানে দেশে অনেক বড় বড় রান্নার প্রতিযোগিতা আয়োজন করা হচ্ছে। এই আয়োজন গুলো রন্ধন শিল্পের প্রতি আমাদের আগ্রহী করে তুলছে। একজন ব্যক্তি যখন রান্নার প্রতি আগ্রহী হচ্ছে তখন তার বিভিন্ন ধরনের মসলা চেনার ও জানার প্রয়োজন হয়। মসলা ছাড়াও রান্না করা সম্ভব তবে নিজের তৈরি খাবার আরও বেশি সুস্বাদু করে তুলতে মসলা ব্যবহার করতেই হবে। আপনারা নিশ্চয়ই বুঝতে পারছেন কেন আমরা মসলার নামের তালিকা নিয়ে এত কথা বলে চলেছি। কেনই বা মসলার নামের তালিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে। রান্নাবান্না ছাড়াও মসলাগুলো অন্যান্য কাজে লাগানো যায়।

 

ধরুন কালিজিরার কথা বলি, কালোজিরা কে সাধারণত আমরা একটি মসলা হিসেবেই চিনি। কালোজিরা হচ্ছে সকল রোগের মহা ঔষধ। অনেক মানুষ আছে যারা এমনিতেই কালোজিরা চিবিয়ে খেতে পারে। তাদের ধারণা কালোজিরা চিবিয়ে খেলে সব ধরনের রোগ থেকে রক্ষা পাওয়া যায়। এ বিষয়ে অনেকেই বৈজ্ঞানিক যুক্তি তুলে ধরতে সক্ষম হয়েছেন। এমন অনেক মসলা রয়েছে যেগুলো আমরা বিভিন্ন রোগের ঔষধ হিসেবে ব্যবহার করি। আয়ুর্বেদিক ঔষধ গুলোতে এ ধরনের মসলাগুলো ব্যবহার করা হয়।

এখন প্রশ্ন হচ্ছে মসলার তালিকা কিভাবে সংগ্রহ করবেন। মসলার তালিকা সংগ্রহ করা খুব কঠিন একটি কাজ নয়। যেহেতু এখন আমাদের সকলের হাতে হাতে মোবাইল ফোন ও ইন্টারনেট কানেকশন রয়েছে তাই যে কোন বিষয়ের সহজ সমাধান খুব অল্প সময়ের মধ্যেই করা যায়। আপনারা অনেকেই ইউটিউব দেখে রান্না শিখে নিতে পারেন। রান্না শেখার সময় নিশ্চয়ই অনেক অপরিচিত শাক-সবজি ও মসলার নাম আপনাদের সামনে আসে। এই নামগুলো আপনারা উইকিপিডিয়াতে সার্চ করে খুব সহজে দেখে নিতে পারবেন মসলাটি কোন কোন কাজে আসে এবং এর ব্যবহার কতটুকু করতে হয়। ইউটিউবে সার্চ করলেও এ সংক্রান্ত অনেক ভিডিও আপনাদের সামনে আসবে।

অবশ্য ইউটিউবে ভিডিও দেখলে বিষয়টি আমাদের অনেকের কাছে খুব সহজ হয়ে যায়। এভাবেই আপনি প্রতিটি মসলার বৈশিষ্ট্যগুলো লিপিবদ্ধ করতে পারেন। প্রতিটি মসলার উপকারিতা আলাদাভাবে নোট করে নিবেন। অনেক সময় মসলার নাম গুলো আপনার মাথার মধ্যে গুলিয়ে যেতে পারে তাই যখন যখন রান্না করবেন অথবা মসলা ব্যবহার করবেন তখন তখন নোটগুলো খুব ভালোভাবে দেখে নেবেন। রান্নার রেসিপি গুলো খুব ভালোভাবে খেয়াল করে দেখবেন কোন মসলা কি পরিমাণে ব্যবহার করতে হবে।

আবার মসলাগুলো যদি কোন রোগের ঔষধ হিসেবে ব্যবহার করতে চান তবে কিভাবে ওষুধ তৈরি করতে হবে অথবা কি পরিমানে খেতে হবে তা সঠিকভাবে জেনে নেওয়া দরকার। আশা করি মসলার সঠিক ব্যবহার আপনারা একই প্রক্রিয়ায় শিখে নিতে পারবেন। আমরা আমাদের পোস্টের মধ্যে অসংখ্য মসলার নামের তালিকা সংযুক্ত করে দেব। মসলার নামের তালিকা সংগ্রহ করা পর্যন্ত আমাদের সাথেই থাকুন।

Similar Posts

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *