প্রতিবন্ধী স্কুলের নামের তালিকা ২০২৩
প্রতিবন্ধী স্কুলের নামের তালিকা যারা খুঁজে চলেছেন তাদের জন্য স্বস্তির খবর আমরা আজ বাংলাদেশের প্রতিবন্ধী স্কুলগুলো নিয়ে আলোচনা করব এবং কিভাবে প্রতিবন্ধী স্কুলের নামের তালিকা খুঁজে পাবেন সে পদ্ধতি নিয়ে আলোচনা করব। প্রতিবন্ধী স্কুলের নামের তালিকায় একজন মানুষ কেন খুঁজে থাকে তা নিয়ে নিশ্চয়ই বেশি কিছু বলার প্রয়োজন নেই। বাংলাদেশে প্রতিবন্ধী স্কুলের তালিকা খুব বেশি তেমনটা বলা যাবে না। আপনার আশেপাশে যদি কোন প্রতিবন্ধী ব্যক্তি থাকে তবে তাকে প্রতিবন্ধী স্কুলে ভর্তি করাতে গেলে আপনি নিশ্চয়ই খুব বেশি স্কুল খুঁজে পাবেন না। আমরা আশেপাশে খুঁজে খুব কমই প্রতিবন্ধী স্কুল দেখতে পেয়েছি।
গ্রামাঞ্চলে প্রতিবন্ধী স্কুলের সংখ্যা খুবই কম। আপনি আশেপাশে দশ পনেরোটি গ্রাম যদি খুঁজে দেখেন তবে দেখবেন খুব বেশি প্রতিবন্ধী স্কুল নেই। যদিও প্রতিটি গ্রামে প্রতিবন্ধী মানুষ রয়েছে কিন্তু এদের ভর্তি করার মতো স্কুল খুব বেশি নেই। এখন প্রশ্ন হচ্ছে এর পরও কিভাবে প্রতিবন্ধী স্কুল গুলো খুঁজে পাওয়া সম্ভব হবে। তাছাড়া বাংলাদেশের প্রতিবন্ধী স্কুলগুলো কোন ধরনের সুযোগ সুবিধা দিয়ে থাকে তাও জেনে নেওয়া দরকার। আপনার অনেকেই হয়তো বাংলাদেশের প্রতিবন্ধী স্কুলগুলোর সুযোগ-সুবিধা সম্বন্ধে অবগত নন। প্রতিবন্ধী স্কুলগুলোতে কোন ব্যক্তিকে ভর্তি করতে গেলে কোন উপায়ে ভর্তি করতে হবে সে বিষয় সম্বন্ধে আমাদের সকলের ধারণা থাকা প্রয়োজন। চলুন এই বিষয়গুলো জেনে আসি আজকের পোস্টের মাধ্যমে।।
প্রতিবন্ধীরা আর দশটা মানুষের মতই সাধারণ মানুষ। তাদের সকলেরই শিক্ষা গ্রহণের অধিকার রয়েছে। আমরা লক্ষ্য করলে দেখব বর্তমান সময়ে অনেক শিক্ষার্থী রয়েছে যারা নিজেদের প্রতিবন্ধকতাকে হার মানিয়ে বড় বড় প্রতিষ্ঠানে পড়াশোনা করছেন। প্রতিবছর বোড পরীক্ষায় জিপিএ-৫ প্রাপ্তদের মধ্যে অনেকেই রয়েছে যারা শারীরিক প্রতিবন্ধী। পা দিয়ে লিখে জিপিএ-৫ পেয়েছে এরকম শিক্ষার্থী আমরা হর হামেশাই দেখে থাকি। সুতরাং বুঝতেই পারছেন একজন প্রতিবন্ধী শিক্ষার্থী ঠিক কতটা পরিশ্রম করে শেষ পর্যন্ত নিজের পড়াশোনা চালিয়ে যায়।
তাদের মধ্যে পড়াশোনা করার যথেষ্ট আগ্রহ রয়েছে। আমরা যদি ছোটবেলা থেকে তাদের উৎসাহ দিয়ে থাকি তবে শেষ পর্যন্ত তারা মনের জোর দিয়ে পড়াশোনা চালিয়ে যেতে পারবে। তবে সমাজে এমন কিছু মানুষ রয়েছে যারা প্রতিবন্ধীদের নানা রকম ভাবে কটুক্তি করতে থাকে। আবার এমন কিছু মানুষ রয়েছে যারা প্রতিবন্ধীদের ভিক্ষা করতে বাধ্য করে। আমাদের মনে রাখতে হবে শারীরিক প্রতিবন্ধকতা কখনোই একজন মানুষের স্বাবলম্বী হওয়ার পথে বাধা হয়ে দাঁড়াতে পারে না। প্রতিবন্ধীরাও একটু চেষ্টা করলেই স্বাবলম্বী হয়ে উঠতে পারে।
অনেকেই মনে করেন প্রতিবন্ধীরা সমাজের বোঝা হয়ে থাকে। একটি পরিবারে কোন প্রতিবন্ধী শিশু জন্মগ্রহণ করলে আমরা তাকে পরিবারের বোঝা ভাবতে শুরু করি। তবে আমাদের এইটা মনে রাখতে হবে তাকে যথেষ্ট যত্ন করতে পারলে সেও একসময় আর দশটা মানুষের দায়িত্ব নিতে পারবে। কিছু সচেতন পরিবার রয়েছে যারা এ কথাগুলো বিশ্বাস করে। বিশ্বাস করে বলেই তারা নিজেদের সন্তানকে সাধারণ শিক্ষার্থীদের সাথে পড়াশোনা করানোর চেষ্টা করে। আবার অনেকেই ভর্তি হয় প্রতিবন্ধী স্কুলে।
আমাদের সমাজে এমন কিছু পরিবার রয়েছে যারা এখনো জানেই না যে শারীরিক প্রতিবন্ধীদের জন্য স্কুল কলেজ রয়েছে। তারা হয়তো ভাবে প্রতিবন্ধী হয়ে জন্ম নেওয়ার শিশুরা সারা জীবন পরিবারের বোঝা হয়ে কাটিয়ে দেবে। একটু চেষ্টা করলেই প্রতিবন্ধী শিশুদের স্কুল কলেজে ভর্তি করা সম্ভব। এর জন্য আপনাকে চোখ কান খোলা রাখতে হবে এবং বাংলাদেশে কোথায় কোথায় প্রতিবন্ধীদের স্কুল রয়েছে তা খুঁজে বের করতে হবে। প্রায় প্রতিটি জেলাতেই প্রতিবন্ধীদের স্কুল থাকা উচিত। একটু খুজলেই দেখা যাবে আপনার আশপাশে হয়তো খুব কাছেই কোন প্রতিবন্ধী স্কুল রয়েছে যেখানে আপনি আপনার শিশুকে ভর্তি করিয়ে দিতে পারবেন।
প্রতিবন্ধী স্কুলের তালিকা খুঁজে বের করা খুব কঠিন কাজ হবে না। বর্তমান সময়ে ইন্টারনেটে একটু ঘাটাঘাটি করলেই খুব সহজে যে কোন তথ্য বের করে ফেলা যায়। প্রতিবন্ধী স্কুলের নামের তালিকা ও ইন্টারনেটের মাধ্যমে খুব সহজেই হয়তো আপনারা বের করে ফেলতে পারবেন। এজন্য প্রয়োজন হবে শুধু প্রবল ইচ্ছা শক্তি। আপনারা হয়তো জানেন না প্রতিবন্ধী স্কুলের শিক্ষকরা বিশেষভাবে প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত হয়ে থাকে। প্রতিবন্ধী শিক্ষার্থীদের পড়াশোনা করানো মোটেও সহজ কাজ নয় কারণ তারা সাধারণ শিক্ষার্থীদের মত নয়।। তাদেরকে পড়াশোনা করাতে গেলে একটু বেশি যত্ন করতে হবে। এজন্যই প্রতিবন্ধী স্কুলের শিক্ষকদের সেভাবেই প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়ে থাকে। বিভিন্ন শিক্ষার্থীদের সাথে মিশতে মিশতে মানসিক প্রতিবন্ধী শিশুদের বিকাশ অনেক দ্রুত হয়ে থাকে।
প্রয়াস প্রতিবন্ধী শিক্ষা প্রতিষ্ঠানটির নাম আপনারা নিশ্চয় শুনে থাকবেন। এটি ঢাকা সেনানিবাসে অবস্থিত। এটি বুদ্ধি প্রতিবন্ধী শিশুদের জন্য। আপনারা যারা ঢাকায় বসবাস করেন তারা চাইলে নিজেদের শিশুকে এখানে ভর্তি করে দিতে পারেন। বুদ্ধি প্রতিবন্ধী শিশুকে পড়াশোনা করানোর জন্য এর চেয়ে ভালো প্রতিষ্ঠান হতে পারে না। প্রয়াস ছাড়াও ঢাকার মধ্যেই বেশ কয়েকটি প্রতিবন্ধী স্কুল রয়েছে। সুইট বাংলাদেশ, এন আইআইডি, রমনা বুদ্ধি প্রতিবন্ধী বিদ্যালয়, মিরপুর বুদ্ধি প্রতিবন্ধী বিদ্যালয় হলো ঢাকার মধ্যে বিখ্যাত কয়েকটি প্রতিবন্ধী স্কুল।
এখন আপনাদের মনে একটি প্রশ্ন আসতে পারে তা হলো প্রতিবন্ধী স্কুলে কেন আপনার শিশুকে ভর্তি করবেন। চলুন এই প্রশ্নের উত্তর খোঁজার চেষ্টা করি। দেখুন আমাদের যাদের বুদ্ধি প্রতিবন্ধী শিশু রয়েছে তারা নিশ্চয়ই অনেক বেশি চিন্তিত থাকি। বুদ্ধি প্রতিবন্ধী শিশুরা কখনো কখনো খুব বেশি শান্ত স্বভাবের হয় আবার কখনো কখনো খুব বেশি চঞ্চল স্বভাবের হয়ে থাকে। এদেরকে দেখাশোনা করা মোটেও সহজ কোনো কাজ নয়। আপনি হয়তো সারাদিন এদের দেখাশোনা করতে করতে মাঝেমধ্যে বিরক্ত হয়ে উঠতে পারেন।
কথাগুলো আপনাদের কাছে খারাপ লাগলেও এগুলো একদম সত্য কথা। আপনি নিজে হয়তো আপনার সন্তানকে ঠিকভাবে পড়াশোনা করাতে পারবেন না এজন্য তাকে এমন কোন প্রতিষ্ঠানের সংস্পর্শে নিয়ে আসতে হবে যারা যত্ন সহকারে আপনার বুদ্ধি প্রতিবন্ধী শিশুকে পড়ানোর চেষ্টা করবে। নিয়মিত স্কুলে যাতায়াত করতে করতে একসময় তার মানসিক অবস্থার পরিবর্তন হলেও হতে পারে। বিভিন্ন মানুষের সাথে মিশতে মিশতে তার চিন্তার জগত আরো বেশি শক্ত হবে। সে প্রতিদিন নতুন নতুন অনেক কিছু শিখতে শুরু করবে এবং মাঝে মাঝে স্বাভাবিক মানুষের মতো আচরণ করবে। এভাবেই এক সময় সুস্থ হয়ে যাওয়াটাও অস্বাভাবিক কিছু নয়। নিশ্চয়ই বুঝতে পারছেন আপনার বুদ্ধি প্রতিবন্ধী শিশুকে কেন স্কুলে নিয়ে আসা প্রয়োজন।
প্রতিবন্ধী স্কুল সম্বন্ধে আমাদের খুব বেশি জানাশোনা নেই কারণ আমরা হয়তো এই বিষয়টি নিয়ে ঘাটাঘাটি করি না। যাদের বাড়িতে হয়তো প্রতিবন্ধী শিশু আছে তারা বিষয়গুলো নিয়ে আলোচনা করলেও অন্যরা কখনোই এগুলো নিয়ে ভাবতে চায় না। আমাদের সকলেরই উচিত প্রতিবন্ধী স্কুল নিয়ে স্বল্প কিছু ধারণা রাখা। আপনার আশেপাশে যদি কোন প্রতিবন্ধী শিশু থেকে থাকে তবে তাকে স্কুলে পাঠানোর পরামর্শ দেওয়া আপনার দায়িত্বের মধ্যেই পড়ে। এজন্য হলেও চেষ্টা করুন প্রতিবন্ধী স্কুল সম্বন্ধে অজানা তথ্যগুলো জেনে নেওয়ার।
আপনার জেলার মধ্যে কয়টি প্রতিবন্ধী স্কুল রয়েছে, স্কুলগুলো শিক্ষার্থীদের কোন ধরনের সুযোগ সুবিধা দিয়ে থাকে, স্কুলগুলোতে যে শিক্ষকরা রয়েছে তারা কেমন পড়াশোনা করিয়ে থাকে এইসব তথ্যগুলো জেনে নেওয়ার চেষ্টা করুন। জেনে নেওয়ার পর আপনার আশেপাশের মানুষজনের সাথে এ বিষয় নিয়ে আলোচনা করুন। এভাবেই প্রতিবন্ধী স্কুল সম্বন্ধে একটি গ্রামের সকল মানুষ সবরকম তথ্য জেনে নিতে পারবে। যেহেতু এখন তথ্য প্রযুক্তির যুগ তাই ইন্টারনেটের মাধ্যমে যেকোনো তথ্য আপনি সংগ্রহ করতে পারবেন এবং আপনার এলাকার মানুষকেও দেখাতে পারবেন। এ ধরনের গুরুত্বপূর্ণ তথ্যগুলো সঠিক সময় পাওয়ার জন্য চোখ রাখুন আমাদের পরবর্তী পোস্টে।