প্রতিষ্ঠানের সুন্দর নামের তালিকা
নতুন একটি প্রতিষ্ঠান তৈরি করার আগে আমরা সকলেই চিন্তা করতে থাকি প্রতিষ্ঠানটির নাম কেমন দেওয়া যায়। এ বিষয় নিয়ে যখন আমরা নিজেদের বন্ধু-বান্ধব ও আত্মীয় স্বজনদের সাথে কথা বলে তখন তারা বিভিন্ন ধরনের মন্তব্য করতে থাকে। অনেকেই প্রতিষ্ঠান শুরু করার আগে নিজের কাছের মানুষদের কাছে বিষয়টি শেয়ার করতে চায় না কারণ তারা হয়তো নেগেটিভ কোন মন্তব্য করতে পারে। প্রতিষ্ঠান শুরু করার আগে যদি আমরা কোন মানুষের কাছ থেকে নেগেটিভ মন্তব্য পাই তখন সে কাজে আমরা আর মন বসাতে পারি না। এজন্যই অনেকে নিজের বন্ধু-বান্ধবদের সাথেও নিজের তৈরি করার প্রতিষ্ঠান নিয়ে কথা বলতে চায় না।
নতুন উদ্যোক্তারা সাধারণত প্রতিষ্ঠান শুরু করার পরেই সে বিষয়টি নিয়ে সবার সাথে কথা বলতে চায়। এরপর তারা আস্তে আস্তে সকলের কাছ থেকে পরামর্শ নিচে থাকে কিভাবে কি করলে প্রতিষ্ঠানটি আরো বেশি সক্রিয় হতে পারবে। তবে প্রতিষ্ঠান শুরু করার আগে সবচেয়ে বেশি চিন্তা যে বিষয়টি নিয়ে করতে হয় তাহলে প্রতিষ্ঠানটির নাম। আমরা আজ এ বিষয়টি নিয়ে কথা বলবো তা হল একটি প্রতিষ্ঠানের নাম কিভাবে সিলেক্ট করা যায়। একটি নাম পছন্দ করার জন্য আপনি কেমন মানুষের কাছ থেকে পরামর্শ নিতে পারেন এবং কোন ধরনের নাম আপনার প্রতিষ্ঠানের জন্য পারফেক্ট হতে পারে।
এর আগে অবশ্যই আপনাকে কনফার্ম করতে হবে আপনি কোন ধরনের প্রোডাক্ট নিয়ে আপনার প্রতিষ্ঠান শুরু করতে চান অথবা আপনার প্রতিষ্ঠানটি ব্যবসা প্রতিষ্ঠান নাকি সেবামূলক প্রতিষ্ঠান। যদি আপনি একটি ব্যবসা প্রতিষ্ঠান শুরু করতে চান তবে অবশ্যই আপনার তৈরি কৃত প্রোডাক্ট এর সাথে মিল রেখেই প্রতিষ্ঠানের নাম সিলেক্ট করতে হবে আর যদি আপনার প্রতিষ্ঠানটি একটি সেবামূলক প্রতিষ্ঠান হয় তবে আপনি যে ধরনের সেবা দিতে পারবেন তার সাথে মিল রেখেই প্রতিষ্ঠানের নাম পছন্দ করতে হবে। চলুন দেখে আসা যাক একটি প্রতিষ্ঠানের নাম ঠিক করার জন্য আপনাকে কোন কোন বিষয়গুলো বারবার ভেবে দেখা উচিত হবে।
প্রথমত আমাদের ভাবতে হবে পৃথিবীতে বড় বড় প্রতিষ্ঠানগুলো কেমন নাম দিয়ে বিখ্যাত হয়েছে। আপনি হয়তো ভাবতে পারেন শুধুমাত্র নাম রাখলেই তো আর বিখ্যাত হওয়া যাবে না, বিখ্যাত হবার জন্য কাজ করাটাও গুরুত্বপূর্ণ। হ্যাঁ, আপনি ঠিকই বলেছেন। বিখ্যাত হবার জন্য কাজ করাটা সত্যিই গুরুত্বপূর্ণ। তবে কাজের পাশাপাশি আপনি যদি একটি সুন্দর নাম পছন্দ করতে না পারেন তবে আপনার প্রতিষ্ঠানটি খুব সহজে জনপ্রিয়তা লাভ করতে পারবে না। খুব সহজে জনপ্রিয়তা লাভ করার জন্য যেমন আপনার গ্রাহকদের মানসম্মত সেবা দিতে হবে ঠিক তেমনি ভাবে আপনার প্রতিষ্ঠানটির নামটিও হতে হবে সুমধুর। প্রতিষ্ঠানের নাম এমন হওয়া উচিত যেন গ্রাহকরা একবার শোনার পর বারবার তার কানের মধ্যে নামটি বাঁজতে থাকে।
এমনটা না হলে শ্রোতাদের মন পাওয়া কখনোই সহজ হবে না। প্রথমেই আমরা বলেছিলাম নাম সিলেক্ট করার জন্য সবচেয়ে বড় বড় কোম্পানিগুলোর নামের দিকে একবার দেখতে হবে। আপনি চাইলে বড় বড় কোম্পানির নামগুলো খাতায় নোট করে নিতে পারেন। খাতায় নোট করে নেওয়ার পর লক্ষ্য করতে হবে কোম্পানিগুলো তাদের কাজের সাথে মিল রেখে নামটি সিলেক্ট করেছে কিনা। অনেক সময় কাজের সাথে মিল নাও থাকতে পারে, তাতে কিছু যায় আসে না। আপনি নামটি কতটা সুন্দর রাখছেন সেটা সবচেয়ে বেশি গুরুত্বপূর্ণ।
ধরুন বর্তমান সময়ের জনপ্রিয় একটি কোম্পানি অ্যাপল। অ্যাপল নামের সাথে কোম্পানির কাজের কোন মিল নেই। এরপরও অ্যাপেল বর্তমান সময়ের অন্যতম জনপ্রিয় একটি কোম্পানি। আবার যদি আমরা মাইক্রোসফটের কথা বলি, মাইক্রোসফট কথাটি শুনলেই আমরা বুঝতে পারছি এটি একটি সফটওয়্যার কোম্পানি। সুতরাং আপনি চাইলে দু’রকম ভাবে ভেবেই নাম রাখতে পারেন। নাম রাখার জন্য নিশ্চয়ই আপনাকে কেউ কোন শর্ত জুড়ে দেবে না।
তো নিশ্চয়ই বুঝতে পারছেন প্রথমত আপনাকে যে কাজটি করতে হবে তা হলো বড় বড় কোম্পানিগুলোর নাম সংগ্রহ করে সেগুলোর একটি নোট করে নিতে হবে। এরপর আপনি এগুলো নিয়ে বেশ কিছুদিন ভেবে দেখতে পারেন। এখন আপনার মাথায় আসতে পারে আপনি যে প্রতিষ্ঠানটি তৈরি করবেন তার নাম ইংরেজিতে দিবেন নাকি বাংলাতে দিবেন। সাধারণত বাংলাদেশের প্রতিষ্ঠানগুলো বাংলা নাম বেশি ব্যবহার করে থাকে। আবার অনেক কোম্পানি ইংরেজি নাম গুলো ব্যবহার করে। নাম বাংলা হোক কিংবা ইংরেজি হোক খেয়াল রাখতে হবে নামটি যেন খুব সহজেই উচ্চারণ করা যায়।
নামটি ছোট হতে হবে এবং শ্রুতি মধুর হতে হবে। আপনি যখন নতুন একটি প্রতিষ্ঠান তৈরি করবেন তখন নিশ্চয়ই প্রতিষ্ঠানটির জন্য একটি লোগো তৈরি করবেন। লোগো তৈরি করার কথা আগে বললাম কারণ নাম সিলেক্ট করার সময় এ বিষয়টি আপনাকে মাথায় রাখতে হবে যেন খুব সহজেই আপনার প্রতিষ্ঠানের নামের একটি লোগো তৈরি করতে পারেন। নামটি যদি সুন্দর হয় এবং ছোট হয় তবে অনেক সুন্দর লোগো তৈরি করতে পারবেন নিজের পছন্দমত। অপরদিকে বড় নাম হলে কখনোই সুন্দর লোগো তৈরি করতে পারবেন না। যদিও এর ব্যতিক্রম হতেই পারে তবে বেশিরভাগ ক্ষেত্রে যেমনটা ঘটে সে বিষয়টির কথাই বললাম।
আপনি যে প্রতিষ্ঠানটি শুরু করতে যাচ্ছেন তা যদি একটি সেবামূলক প্রতিষ্ঠান হয় তবে চেষ্টা করবেন বাংলা নাম ব্যবহার করতে। বাংলা নাম গুলো সাধারণত আমাদের দেশের সব মানুষ খুব সহজে উচ্চারণ করতে পারবে এবং তারা এই নামের অর্থ খুব সহজেই বুঝতে পারবে। ইংরেজি নাম ব্যবহার করলে সকলে উচ্চারণ করতে পারবেনা আবার নামের অর্থ বোঝাটাও অনেকের জন্য কঠিন হয়ে যাবে। এখন আপনি ভাবতে পারেন এই নামগুলোর তালিকা কিভাবে সংগ্রহ করা সম্ভব হবে।
প্রতিষ্ঠানের সুন্দর নামের তালিকা সংগ্রহ করা কঠিন কোন কাজ হওয়ার কথা নয়। আপনি নিজেও খুব সহজেই প্রতিষ্ঠানের যেকোনো সুন্দর নাম সিলেক্ট করতে পারবেন। আবার এই বিষয়টি নিয়ে যদি আপনি কনফিউজড হয়ে থাকেন তবে এমন কিছু মানুষের পরামর্শ নিবেন যারা ইতিপূর্বে কোন একটি প্রতিষ্ঠান শুরু করে সফল হয়েছে। এ কথাটি বলার কারণ হলো প্রতিষ্ঠানের শুরুর দিকে আপনি নিশ্চয়ই চাইবেন না আপনার কাছের মানুষদের সাথে বিষয়টি শেয়ার করতে। কেউ যদি সেবামূলক প্রতিষ্ঠান শুরু করতে যায় তবে বিষয়টি সবার সাথে আলোচনা করেই শুরু করে কিন্তু যদি কেউ ব্যবসা প্রতিষ্ঠান শুরু করে কিংবা নতুন কোন ব্যবসার উদ্যোগ গ্রহণ করে তবে প্রথমদিকে হয়তো খুব বেশি মানুষের সাথে শেয়ার করার কথা ভাবেনা।
একটি প্রতিষ্ঠান শুরু করার সময় নাম পছন্দ করাটা কত গুরুত্বপূর্ণ তা হয়তো প্রথম দিকে আপনি বুঝতে পারবেন না। এ বিষয়টি বুঝতে পারবেন প্রতিষ্ঠান শুরু করার কিছুদিন পর থেকে। আপনার প্রতিষ্ঠান জনপ্রিয়তা লাভ করলে সকলের মুখে মুখে নামটি থাকবে। প্রতিমুহূর্তে এই নামটি আপনাকে উচ্চারণ করতে হবে তাই আগে থেকে এ বিষয়গুলো ভেবে রাখাটা দরকার। আগে থেকে ভেবে না রাখলে পরবর্তী সময়ে আপনি হয়তো আপনার গ্রাহকদের নামটি সঠিকভাবে বুঝাতে পারবেন না।
এমন একটি নাম সিলেক্ট করতে হবে যে নামটি একবার উচ্চারণ করার সাথে সাথেই সকলে বুঝা যাবে। আর হ্যাঁ, নাম সিলেক্ট করার সময় নিশ্চয়ই নামের অর্থ গুলো জেনেই সিলেক্ট করতে হবে। নাম শোনার পর যে কেউ আপনাকে জিজ্ঞেস করতে পারে এই নামের অর্থ কি? আপনি নিজেই যদি নামের অর্থ না জানেন তবে তাকেও বোঝাতে পারবেন না। আশা করি এখন খুব সহজেই আপনার প্রতিষ্ঠানের জন্য সুন্দর একটি নাম পছন্দ করতে পারবেন। পরবর্তী সময়ে সুন্দর অনেক নামের তালিকা নিয়ে আমরা পোস্ট করব। আশা করি সে সময় পর্যন্ত চোখ রাখবেন আমাদের লেখাগুলোতে।