শীতকালীন সবজির নামের তালিকা

শীতকালীন সবজির নামের তালিকা

শীতের সময় গুলো আমরা দারুণভাবে উপভোগ করতে পারি কারণ এ সময় কিছু মজার মজার খাবার খেতে পাওয়া যায়। এই মজার মজার খাবারের মধ্যে অন্যতম হলো শীতের পিঠা। শীতের পিঠা ছাড়াও খেজুরের রস, শীতকালীন ফল ও শীতকালীন সবজি তো রয়েছেই। আমাদের আজকের‌ আর্টিকেলের মধ্যে আমরা বেশ কিছু শীতকালীন সবজি নিয়ে কথা বলব। শীতকালীন সবজি নিয়ে কথা বলার কারন হল আমরা যারা সবজির অনেক বেশি পছন্দ করে থাকি তারা অনেকে হয়তো জানে না কোন সবজিতে কেমন পুষ্টিগুণ থাকে। আবার সবাই যে সব রকম সবজি চেনে এমনটা বলা যায় না। এমন অনেক মানুষ রয়েছে যারা খুব বেশি সবজি চেনে না।

হয়তো কেউ কেউ শুধুমাত্র আলু বেগুন ছাড়া অন্য কোন সবজির নামও জানেনা। যারা নিয়মিত বাজার করতে যান তাদের কাছে সব ধরনের সবজি চেনাটাই স্বাভাবিক। নিয়মিত বাজার করতে যায় এমন মানুষ ছাড়া অন্যরা হয়তো হাতেগোনা দু একটি সবজি বাদে অন্য সবজিগুলোর নাম পর্যন্ত জানে না। তো আমাদের আজকের আর্টিকেলটি দুই ধরনের মানুষের জন্যই কাজে দেবে। প্রথমত আপনি যদি সব ধরনের সবজি চিনে থাকেন তবে জেনে নিতে পারবেন এই সবজি গুলোর মধ্যে কেমন পুষ্টিগুণ রয়েছে আবার আপনি যদি সবজি না চিনে থাকেন তবে আমাদের আর্টিকেলটি পড়ে সবজি চিনে নিতে পারবেন। আশা করি শেষ পর্যন্ত আমাদের সাথে থাকবেন।

শীতকালীন সবজি নিয়ে আমরা কেন কথা বলছি? শীতকালীন সবজি নিয়ে আমরা কথা বলছি এই কারণে যে শীতের সময় প্রচুর পরিমাণ সবজি আমরা দেখতে পাই। এমন অনেক সবজি আছে যেগুলো আমরা শীতকাল ছাড়া কখনোই খুঁজে পাই না। শীতকালে অনেক সবজি উৎপাদন হয় তাই এ সময় সবজির দামও থাকে নাগালের মধ্যেই। গরমের সময় আমরা বাজারে পেছনে যা খরচ করি শীতের সময় তেমন খরচ করলে ব্যাগ ভর্তি করে বাজার করা সম্ভব। যারা সবজি পছন্দ করেন না তাদের জন্য হয়তো শীতকাল খুব বেশি উপভোগ্য নয়।

সবজি খাওয়ার অভ্যাস কেন করতে হবে এ নিয়ে আমরা কিছু কথা তুলে ধরব। আপনারা জেনে নেওয়া উচিত কেন একজন ব্যক্তিকে প্রতিদিন শাকসবজি খেতে হয় ‌। আপনি যদি সবজি পছন্দ করে থাকেন তবে তো কোন কথাই নেই, আর যদি না পছন্দ করে থাকেন তবে অনেক কথা আছে যা আপনার জানা প্রয়োজন। আমরা হয়তো বুঝতে পারিনা নিয়মিত শাকসবজি না খাওয়ার কারণে আমাদের কতটা ক্ষতি হচ্ছে। সময় থাকতে সচেতন হওয়া উচিত।

শাক সবজির বিভিন্ন ধরনের ক্যান্সার প্রতিরোধে অনেক বড় ভূমিকা পালন করে। কোলন ক্যান্সারের নাম আপনারা নিশ্চয় শুনে থাকবেন। যারা দীর্ঘদিন ধরে কোষ্ঠকাঠিন্য ভুগছেন তাদের কোলন ক্যান্সার হবার কিছুটা হলেও সম্ভাবনা রয়েছে। সময় থাকতে আপনি যদি সচেতন হতে পারেন তবে এখনই ক্যান্সার প্রতিরোধ করতে পারেন। এর আগে আমাদের জানতে হবে কোষ্ঠকাঠিন্য কেন হয়? আমরা যদি নিয়মিত পানি পান না করি এবং সঠিক সময় মলত্যাগ না করি তবে কোষ্ঠকাঠিন্য হওয়ার সম্ভাবনা থাকে।

যারা নিয়মিত শাকসবজি খেতে চান না, সব সময় আমিষ জাতীয় খাবার খেয়ে থাকেন তাদের অনেক বেশি কোষ্ঠকাঠিন্য দেখা যায়। কোষ্ঠকাঠিন্য এড়াতে চাইলে প্রতিদিন শাকসবজি খেতে হবে। এর পাশাপাশি যথেষ্ট পানি পান করতে হবে। এছাড়াও শাকসবজিতে যে ভিটামিন রয়েছে তা বিভিন্ন ধরনের রোগ প্রতিরোধে সাহায্য করে। রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ানোর জন্য শাকসবজি খাওয়াটা খুব জরুরী। এরপরও যদি আপনি নিয়মিত শাকসবজি না খান তবে আপনার জন্য অনেক কঠিন সময় অপেক্ষা করছে। আজ আমরা আপনাদের জানিয়ে দেবো কোন সবজিগুলো সবচেয়ে বেশি বেশি খাওয়া উচিত।

আপনার সন্তানকে ছোট থেকেই সবজি খাওয়ার প্রতি আগ্রহী করে তুলুন। ছোটবেলা থেকে তাকে যেভাবে বড় করে তুলবেন সে সেভাবেই বড় হবে। আপনি যেমন শিক্ষা দিবেন, যেসব খাবার খেতে শিখাবেন সে তেমনই পছন্দ করতে শুরু করবে। সবজির পুষ্টি গুণ সম্বন্ধে তাকে জানিয়ে দিন। কোন সবজি কত বেশি বেশি খাওয়া উচিত সে তথ্যগুলো তার সামনে তুলে ধরুন। আমরা যদি ছোট বাচ্চাদের জানিয়ে দেই সবজি খেলে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা অনেক বেড়ে যায় তবে তারা নিয়মিত সবজি খেতে শুরু করবে। এভাবেই সবজি খাওয়ার অভ্যাস তৈরি হবে।

অনেক ছেলেমেয়েরা বড় হওয়ার পরও সবজির নাম শুনতে পারে না। এদের যদি ছোটবেলা থেকে সবজি খাওয়ানোর অভ্যাস করা হতো তবে তারা কখনোই এমনটা করত না। ফাস্টফুড ও স্নেহজাতীয় খাবারের প্রতি শিশুদের আগ্রহে করে তুললে পরবর্তীতে তারা শাকসবজি মুখে তুলতে চাইবে না। এতে শিশুদের রোগাক্রান্ত হবার সম্ভাবনা আস্তে আস্তে বাড়তে থাকবে। স্নেহ জাতীয় খাবার বেশি খেলে গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা হবার সম্ভাবনা থাকে।

সবজির কথা বলতে গেলে প্রথমেই চলে আসে আলুর নাম। আমরা বাজার করতে গেলে সবচেয়ে বেশি যে জিনিসটি কিনি তা হচ্ছে আলু। আলো ছাড়া বাজার করা যেন অসম্পূর্ণ। এর পেছনে একটি শক্তিশালী কারণ রয়েছে। কারণটি হলো আমরা প্রতিটি সবজির সাথে আলু ব্যবহার করতে পারি রান্নার সময়। আপনি যেকোন তরকারির সাথে আলু ব্যবহার করতে পারবেন। আবার শুধু আলু ব্যবহার করেই অনেক রকম তরকারি রান্না করা যায়। আলু আমরা যেমন ডিম দিয়ে রান্না করতে পারি, তেমনি মাছ ও মাংস দিয়ে ও রান্না করতে পারি।

এছাড়াও আলুর সাথে অন্য অনেক রকম তরকারি মিশিয়ে রান্না করা যায়। কখনো যদি আমাদের রান্না করতে ইচ্ছে না করে তখন আমাদের মাথায় যে বিষয়টি আসে তা হচ্ছে ভর্তা ভাত। আর ভর্তা মানেই হল আলু ভর্তা। ভাতের সাথে আলু সিদ্ধ করে লবণ ও মরিচ মাখিয়ে খুব সহজেই ভর্তা তৈরি করা যায়। ব্যাচেলররা বেশিরভাগ সময়েই ভর্তা ভাত খেয়ে থাকে। এছাড়াও আলু সেদ্ধ করেও খাওয়া যায়। এই পৃথিবীতে অনেক মানুষ রয়েছে যাদের প্রধান খাবার আলু। আলু কত জনপ্রিয় একটি সবজি তা তো আমরা বুঝতেই পারছি।

আলুর পরেই বাংলাদেশের জনপ্রিয় একটি সবজি বেগুন। বাংলাদেশে কয়েক প্রজাতির বেগুন দেখা যায়। বেগুনের প্রতি অনেক মানুষের কোন আগ্রহ নেই। তারা শীতের সময় কিছুতেই বেগুন পাতে তুলতে চায় না। আবার যারা সবজি পছন্দ করেন তাদের কাছে বেগুন অনেক ভালোবাসার একটি সবজি। একটু কল্পনা করুন, বর্ষার দিন, গরম গরম ভাত আর দুই পিছ বেগুন ভাজা, কেমন হবে? আমার তো মনে হয় আপনার জিভে জল চলে এসেছে। হ্যাঁ, বেগুন ভাজা এত সুস্বাদু একটি খাবার যা পছন্দ করে না এমন মানুষ হয়তো খুঁজে পাওয়া যায় না। শীতকালীন আরও একটি সবজি হল ফুলকপি। ফুলকপি দেখতে যেমন সুন্দর, খেতে এর চেয়ে কয়েকগুণ বেশি মজা।

ফুলকপি দিয়ে আপনি বেশ কয়েক ধরনের তরকারি রেখে ফেলতে পারেন। ফুলকপির সাথে আলু মিশিয়ে অথবা বেগুন মিশিয়ে কিংবা ফুলকপি ও মাছের তরকারি রাখতেই পারেন। শীতের সময়গুলোতে নিজের প্রিয়জনকে ফুলকপির তরকারি রেখে খাওয়াতে পারেন। আপনার প্রিয়জন যদি সবজি প্রেমিক হয়ে থাকে তবে হয়তো আপনার চেয়েও বেশি ভালবাসতে শুরু করবে ফুলকপিকে। শেষ পর্যন্ত ফুলকপির তরকারি রাখতে গিয়ে নিজের প্রিয়জনকে না হারিয়ে ফেলেন।

শীতকালীন আরো কয়েকটি সবজি হলো মুলা, গাজর, বাঁধাকপি, টমেটো। মুলা গাজর ও টমেটো আমরা কাঁচা অবস্থাতেও খেতে পারি। কাঁচা মুলা গাজর ও টমেটো খাওয়ার অন্যরকম মজা। তবে কাঁচা মুলা খাওয়ার প্রতি অনেকের তেমন আগ্রহ দেখা যায় না। ছোট মাছ দিয়ে মুলার তরকারি ভীষণ সুস্বাদু হয়। পাকা টমেটোর সালাদ পরিবেশন করা হয় খাবার শুরুতে। এমন কোন শীতকালীন সবজির নাম যদি আপনার জানা থাকে যা খুব বেশি মানুষ হয়তো চেনে না তবে নামটি কমেন্ট বক্সে জানিয়ে দিতে পারেন।

Similar Posts

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *